পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 obr বিভূতি-রচনাবলী স্বাক, সে সব কথায় দরকার কি আমাদের । বিয়ে-থাওয়া মিটে গেল, বর-কনে আমাদের বাড়ী এসে উঠল। বৌভাত কিন্তু আমাদের বাড়ীতে হবে না একথা ছিল আগে থেকেই। কারণ আমাদের এখানে বৌভাত করতে গেলে আমাদের নামডাকের উপযুক্ত জাকজমকের সঙ্গে বৌভাত করতে হয়—নইলে আমাদের নিন্দে হবে । সে খরচ দেয় কে, কাজেই ঠাকুরমা বলেছিলেন – বেী এখানে তুলে তারপর তুমি পৈতৃক ভিটেতে নিয়ে ষেও। সেখানে কাজকৰ্ম্ম ক’রে গিয়ে । এখানে ওসব হবে না। পাচুমামা বোঁ নিয়ে নিজের বাড়ী চলে গেল। আমার মা ছিলেন বড় খাটি লোক। তিনি জানতেন না যে পাচুমামা বিয়ের আগে কি জুয়াচুরির আশ্রয় নিয়েছিল, আমাদের বিষয়ে তার পাচ আন অংশ থাকা নিয়ে। মা বল্লেন-পাচুর বৌটি যেন হয়েছে দুর্গাপ্রতিমা,—কিস্তু মেয়েটার অদৃষ্ট তাল নয়। আমার জাতি ভাই হলেও আমি বলছি—ওরকম পাত্রে অমন রূপের ডালি মেয়ে কি দেখে ষে বুড়ে দিল, তা সেই জানে। ওই বঁiদরের গলায় ওই মুক্তোর মালা ! মা জানতেন না এর মধ্যে আসল কথাটা কি ! পাত্রীর বাবার কোন দোষ ছিল না, মৃত সব জুয়োচোরের পাল্লায় পড়ে সরল বৃদ্ধ তার স্বন্দরী মেয়েটিকে হাত-পা বেঁধে জলে ফেলে দিয়েছেন। সে জল ষে কত গভীর জল, প্রথম থেকেই তা বুঝতে নববধু বা তার বাপ, কারও বাকী রইল না। পাচুমামা বোঁ নিয়ে পৈতৃক বাড়ী বন্দিপুরে চলে গেল বটে—কিন্তু বৌভাত হলেন সেখানে। পয়সা কোথায় পাচুমামার যে বৌভাত হবে ? বন্দিপুর বড় কখনো যেতাম না—এখান থেকে পাচুমামা চলে যাওয়ার পরে আমার সঙ্গে আর অনেক দিন ওদের দেখা হল না—বিয়ে করার পরে এখানে আসাটা যেন পাচুমামার কমে গেল। দাদা মাঝে মাঝে ধেত বন্দিপুরে- এসে গল্প করত, পাচুমামার সংসার অতি কষ্টে চলছে। নতুন বৌয়ের গায়ে এক আধখানা গহনা যা তার বাবা দিয়েছিলেন, এরই মধ্যে পাচুমাম বেচে ফেলেছে। বৌটি কিন্তু খুব ভালো, সে ইচ্ছে করে গহনা খুলে দিয়েছে –ĘGJffff | বছর তিন-চার কাটল। তারপর একদিন খবর এল পাচুমামা মারা গিয়েছে। আগে থেকে নেশা-ভাঙ, খায়, লিভার ছিল খারাপ, নেফ্রাইটিস হয়ে মারা পড়েছে, চিকিৎসাপত্ৰ বিশেষ কিছু হয়নি। দিন পনেরো পরে একদিন সকালে আমি বাইরের উঠানে একগাছা ছিপ চাচতে বসেছি —দাদা বাড়ী নেই, কোথায় বেরিয়েছে—ঠাকুরমা নদীর ঘাটে নাইতে গিয়েছেন—এমন সময় আমাদের বাড়ীর সামনে একখানা গরুর গাড়ী এসে দাড়াল। গাড়ী থেকে নামলেন হৃষীকেশ বাড়ুয্যে এবং তঁfর বিধবা মেয়ে। আমি ছুটে কাছে এলুম–পাচুমামার বিধবা স্ত্রীকে পায়ের ধুলো নিয়ে প্রণাম করলুম, বাড়ুখ্যে মশায়কেও করলুম। রূপসী বটে এই বিধবা মেয়েটি। মেয়ে না অগ্নিশিখা ! ৰিয়ের সময়েও তো এতটা রূপ দেখিনি মামৗমার! আমি মামীমাকে বাড়ীর মধ্যে নিয়ে গিয়ে মার