পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দু হোটেল פס\צ আছে, তাহার উপর আসিয়া বসিল। সৰ্ব্বাঙ্গে স্বাম, এক হাট ধুলা—একটু জিরাইয়া লইয়া ঘাম মরিলে সম্মুখের ক্ষুত্র ডোবাটার জলে পা ধুইয়া জুতা পায়ে দিয়া ভদ্রলোক সাজিয়া গ্রামে ঢোকাই যুক্তিসঙ্গত । একটি প্রৌঢ়বয়স্ক পথিক যশোরের দিক হইতে আসিতেছিল, হাজারিকে দেখিয়া সে কাছে গিয়া বলিল—দেশলাই আছে ? —আছে, বন্ধন । —আপনারা ? —ব্রাহ্মণ । —প্ৰণাম হই, একটু পায়ের ধুলো দেন ঠাকুরমশাই । লোকটির নাম কৃষ্ণলাল, জাতিতে শাখারি, বাড়ী পূৰ্ব্ববঙ্গ অঞ্চলে। কথাবার্তায় বেশ টান আছে পূৰ্ব্ববঙ্গের । বনগ্রামে ইছামতীর ঘাটে তাহাদের শাখার বড় ভড় নোঙর করিয়া আছে, কৃষ্ণলাল পায়ে হঁটিয়া এ অঞ্চলের গ্রামগুলি এবং ক্রেতার আহমানিক সংখ্যা ইত্যাদি দেখিতে বাহির হইয়াছে। কাজের লোক বেশীক্ষণ বসে না। একটা বিড়ি ধরাইয়া শেষ করিবার পূৰ্ব্বেই কৃষ্ণলাল উঠিতে চাহিল। হাজারি কথাবার্তায় তাহাকে বসাইয়া রাখিল । বনগী হইতে সতেরো মাইল পথ হাটিয়া ব্যবসার খোজ লইতে বাহির হইয়াছে যে লোক, তাহার উপর অসীম শ্রদ্ধা হুইল হাজারির ব্যবসা কি করিয়া করিতে হয় লোকটা জানে । সে বলিল -গাজাটাজা চলে ? আমার কাছে আছে— কৃষ্ণলাল একগfল হাসিয়া বলিল—তা ঠাকুরমশায়—পেরসাদ যদি দেন দয়া ক’রে—তবে তো ভাগ্যি । —বোসো তবে, এক ছিলিম সাজি । হাজারি খুব বেশী ৰে গাজ খায়, তা নয়। তবে উপযুক্ত সঙ্গী পাইলে এক-আধ ছিলিম ধাইয়া থাকে। আজকাল রাণাঘাটে গাজা খাইবার সুবিধা নাই, হোটেলের সকলে খাতির করে, তাহার উপর নরেন আছে—এই সব কারণে হোটেলে ও ব্যাপার চলে না—বাসায় তো নয়ই, সেখানে টেপি আছে । আবার যাহার তাহার সঙ্গেও গাজা খাওয়া উচিত নয়, তাহাতে মান থাকে না। আজ উপযুক্ত সঙ্গী পাইয়া হাজারি হৃষ্টমনে ভাল করিয়া ছিলিম সাজিল। কলিকাটি ভদ্রতা করিয়া কৃষ্ণলালের হাতে দিতে ৰাইতেই কৃষ্ণলাল এক হাত জিভ কাটিয়া হাত জোড় করিয়া বলিল—বাপরে, আপনাৱা দেবতা । পেরসাদ করে দিন আগে-- কথায় কথায় হাজারি নিজের পরিচয় দিল। কৃষ্ণলাল খুশি হইল, সেও বাজে লোকের সঙ্গে মিশিতে ভালবাসে না—নিজের চেষ্টায় যে রাণাঘাটের বাজারে দুটি বড় বড় হোলেটের মালিক, তাহার সহিত বসিয়) গাজা খাওয়া যায় বটে । - হাজারি বলিল—রাণাঘাটে তো ধাবে, আমার হোটেলেই উঠো। রেলবাজারে আমার