পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(दनैौगैौद्ध झूलदोड़ी ৪২১ নীরদ মশারি খুলিয়া কোণের দিকে লইয়া গিয়া আবার খাটাইতে লাগিল। শান্ডিয়াম বিরক্তমুখে বিছানায় বসিয়া ছিল, কেরোসিনের টেমির মৃত্ন আলোয় নীরদার দিকে চাহিয়া দেখিল—নীরদ দেখিতে যেন বুড়ী হইয়া গিয়াছে এরই মধ্যে। বিবাহের পর প্রথম কয়েক বছর কি স্বন্দর ছিল দেখিতে । সে তুং, সে চেহার কয়েক বছরের মধ্যেই যেন ভোজধাজির মত উড়িয়া গেল । ঠিক তেমন ভালবাসাই কি এখন আছে ? সে আকুলি-বিকুলি ভাব, না দেখিলে বাচি না ইত্যাদি - বহুদিন চলিয়া গিয়াছে। নীরদ মশারি খাটাইতেছে। সামনের কপালখান মাঠের মত চওড়া হইয়া গিয়াছে চুল ওঠার দরুন, ময়লা শাড়ীখানাতে চেহারা আরও খারাপ দেখাইতেছে। ৰেন ভদ্রলোকের ঘরের মেয়েই নয় । ফসর্ণ একথান কাপড় পরিলে কি হুইত ? শান্তিরামের মনে স্ত্রীর প্রতি হঠাৎ কেমন অমুকম্প জাগিল । বেচারী নীরদ ! তাহারই দোধে নীরদ অমন হইয়া গিয়াছে । মেয়েমাকুব অসহায়, যেমন রাখিবে তেমনি থাকিবে । পরাও না শাস্তিপুর ফরাসডাঙার জরিপার শাড়ী, চড়াও না মোটরগাড়ীতে ? এমন চড়িবে যখন, সাজসজ্জাও করিবে তখন । উহার দোষ কি ? না-কাল উঠিয়া কোন একটা চেষ্টা-চরিত্র দেখিতে হইবে । হাত-পা হারাইলে চলিবে না ! নীরদ বলিল—পান দেব, পান থাবে ? —ন। এক গেলাস জল বরং দাও ! তামাকের পাত্রটা কোথায় রেখেছ ? টিকে গুলোতে জল না পড়ে । —তামাক খাবে নাকি ? সাজবো ? —থাক, তুমি জল দাও। তামাক আমি সজিছি। তামাক টানিতে টানিতে শাস্তিরাম বলিল -- এখানে আর দেনা কত হয়েছে ? . —ত পনেরো-বোল টাকা কেষ্টর দোকানে বাকি পড়েছে। রোজ তাগাদ করে, বলেছিলাম পূজোর সময় বাড়ী এলে একেবারে নিও— —পনেরো-ষোল টাক1 ! এত ধার জমলে কি করে ? নীরদ একটু ঝাজের সহিত বলিল-জমবে আর কি করে। চার মাস যে বাড়ীতে উপুড়হাত করোনি সে কথা মনে আছে ? চালাচ্ছি কি করে তবে ? তবুথ আমার কথায় চাল ধার দেয়—নইলে পাড়ায় ধার দেওয়া দোকান থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। এই কথাটিতে শাস্তিরামের দুর্ভাবনা আবার বাড়িয়া গেল। একটা টাকা যাহার কাছে একটা মোহর–বর্তমানে, তাহার মুর্দীর দোকানে পনেরো-ষোল টাকা বাকি ] না শোধ করিলে অবগুই চলে এবং চলিতও । কিন্তু বর্তমানের অসহায় অবস্থায় দোকান হইতে ধারে জিনিসপত্র না লইলে চলিবে না এবং লইতে গেলেই পূর্কের জেনার কিছু অংশ শোধ করিতেই হুইবে ।