পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88e বিভূতি-রচনাবলী —ললিতবাৰু? বেশ যাব ও-বেলা । মেয়েটি চলিয়া গেল । ভাবিলাম, মেয়েটি কে । ললিতবাবুর ঝি নাকি ? কখনও সেখানে দেখিয়াছি বলিয়া মনে হইল না। বেশ দেখিতে মেয়েটি। এ দেশের হিন্দুস্থানী মেয়ের সচরাচর যেমন জাটর্সটি গড়নের হয়, তেমন তো বটেই, ফর্সা, ধপধপে রং, মুখশ্ৰীও বেশ লালিত্যপূর্ণ। Gł সন্ধ্যাবেলায় ললিতবাবুর বাসায় গেলাম। ললিতবাবু উমুনে কড়া চাপাইয়া চায়ের জল গরম করিতেছিলেন । জল নামাইয়া দুধ ও ভেলিগুড় মিশাইয়া চা তৈরী করিয়া আমায় খাইতে দিলেন। আমি বলিলাম—একটি মেয়ে গিয়ে আমায় আপনার এখানে আসতে বল্পে। কদিন ব্যস্ত ছিলাম বলে আসতে পারি নি— ললিতবাবু বলিলেন—ও মণিয়া গিয়েছিল বুঝি ? তা এসেছেন ভালই করেছেন। আমি ভাবছিলাম, কেন আর আসেন না। স্বল্পমাত্র ভূমিকার পর ললিতবাবু আবার বইয়ের কথা পাড়িলেন । —জানেন ব্যাপারটা, হাতে একটু টাকার ইয়ে যাচ্ছে। ভাবলাম বই দুখানার একখানাও যদি লাগিয়ে দিতে পারেন তবে এ সময়ে কিছু পেলে বড় উপকার হত। তাই মণিয়াকে ওবেলা আপনার ঠিকানা দিয়ে—তা করেছেন কিছু ? বড় বিপদে পড়িলাম দেখিতেছি। ও বইয়ের আমি কি করিয়া কি করিব বুঝিলাম না। সেকথা ললিতবাবুকে বলিতে কিন্তু আমার মন সরিল না, কেন কি জানি ! বলিলাম—আজ্ঞে হ্যা। দু-তিনজন পাবলিশারকে লিখেছি, এখনও উত্তর পাইনি—পেলেই জানাব আপনাকে । ললিতবাবু বলিলেন—আপনাকে কষ্ট করে আসতে হবে না। মণিয়া যখন বাড়ী চিনে গেছে, ওই পরশু লাগাং আর একবার যাবে এখন— —মণিয়া বুঝি আপনার এখানে কাজ করে ? ললিতবাবু যেন ঢোক গিলিয়া বলিলেন—হঁ্যা—ইয়ে—মণিয়া ?--ইnআমি সেদিন বিদায় লইয়া আসিলাম । তৃতীয় দিন মণিয়া আমার বাসায় আবার গিয়া হাজির ৷ এদিন আমার কৌতুহল হওয়াতে মণিয়াকে বলিলাম - ললিতবাবুর ওখানে কতদিন আছিস । r মণিয়া বেশী কথা বলে না, মুখ না তুলিয়া কি একটা বলিল ভাল বুঝিতে পারিলাম না। তাহার হাতে পাঁচটি টাকা দিয়া বলিলাম—ললিতবাবুকে গিয়ে বলে কলকাতা থেকে পাঠিয়ে দিয়েছে— মণিয়া টাকা কয়টি লইয়া চলিয়া গেল। ইহার পর দিনকতক ললিতবাবু আমাকে বড় উদ্ব্যস্ত করিয়া তুলিলেন। কোন পাবলিশার তার বই লইতেছে—কি কথা হইতেছে তাহাজের সঙ্গে ইত্যাদি। বই পড়িয়া রহিয়াছে আমার বাসায়। কলিকাতায় বইওয়ালার এত বোকা নয় যে, ওই বইয়ের জন্য অগ্রিম টাকা দিতে যাইবে । মুখে বলিলাম—বই নেৰে কি না তার