পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ 43 বিভূতি-রচনাবলী চালাইবে—তবে বাজারের হোটেলের আয় হিসাবমত কুহমকে ও টেপির মাকে ভাগ করিয়া দিতে থাকিবে । বিবাহের দিন ধাৰ্য্য হইয়া গেল । টেপির মা বলিল—শুগো, তোমার মেয়ে বলছে অতসীকে নেমস্তন্ন করে পাঠাতে । ওর বড় বন্ধু ছিল—তাকে বিয়ের দিন আসতে লেখ না ? হাজারিও সে-কথা ভাবিয়াছে । অতসীর সঙ্গে আজ বহুদিন দেখা হয় নাই। সেই মেয়েটির অযাচিত করুণা আজ তাহাকে ও তাহার পরিবারবর্গকে লোকের চোখে সম্রাস্ত করিয়া তুলিয়াছে। অতপর শ্বশুরবাড়ীর ঠিকান হাজারি জানিত না, কেবলমাত্র এইটুকু জানিত অতসীর শ্বশুর বদ্ধমান জেলার মূলঘরের জমিদার । হাজারি চিঠিখান। উহাদের গ্রামে অতসৗর বাবার ঠিকানায় পাঠাইয়া দিল, কারণ সময় অত্যন্ত সংক্ষেপ। লিখিয়া ঠিকানা আনাইয়া পুনরায় পত্র লিখিবার সময় নাই । বিবাহের কয়েকদিন পূর্বে হাজারি শ্রমস্ত র্কাসারির দোকানে দানের বাসন কিনিতে গিয়াছে, শ্ৰীমন্ত বলিল—আমন আম্বন হাজারিবাবু, বহন । ওরে বাবুকে তামাক C育 C研ー হাজারি নিজের বাসনপত্র কিনিয়া উঠিবার সময় কতকগুলি পুরানো বাসনপত্র, পিতলের বালতি ইত্যাদি নূতন বাসনের দোকানে দেখিয়া বলিল—এগুলো কি হে ভ্রমস্ত ? এগুলো তো পুরোনো মাল—ঢালাই করবে নাকি ? শ্ৰীমন্ত বলিল—ও-কথা আপনাকে বলব ভেবেছিলাম বাবু। ও আপনাদের পুরোনে হোটেলের পদ্মঝি রেখে গেছে—হয় বন্ধক নয় বিক্রী। আপনি জানেন না কিছু ? চক্কত্তি মশায়ের হোটেল যে সীল হবে আজই । মহাজন ও বাড়ীওয়ালার দেন একরাশ, তারা নালিশ করেছিল । তা বাবু পুরোনে মালগুলো নিন না কেন ? আপনাদের হোটেলের কাজে লাগবে—বড় ডেকুচি, পেতলের বালতি, বড় গামলা । সস্তা দরে বিক্রী হবে-ও বন্ধকী মালের হ্যাংনাম কে পোয়াবে বাবু, তার চেয়ে বিক্রীই করে দেবো— হাজারি এত কথা জানিত না । বলিল—পদ্ম নিজে এসেছিল ? শ্রমস্ত বলিল—ই্য, ওদের হোটেলের একটা চাকর সঙ্গে নিয়ে । হোটেল সীল হলে কাল একটা জিনিসও বার করা যাবে না ঘর থেকে, তাই রেখে গেল আমার এখানে । বলে গেল এগুলো বন্ধক রেখে কিছু টাকা দিতেই হবে ; চকত্তি মশায়ের একেবারে নাকি श्रा5ळ । - বাসনের দোকান হইতে বাহির হইয়া অন্ত পাচটা কাজ মিটাইয়া হোটেলে ফিরিতে অনেক বেলা হইয়া গেল। একবার বেচু চকত্তির হোটেলে যাইবে ভাবিয়াছিল, কিন্তু তাহ আর ঘটিয়া উঠিল না ।