পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y&No বিভূতি-রচনাবলী একটু পরে পদ্মঝি স্থ হাতে দুটি বড় বালতি লইয়া হোটেলের পিছনের দরজা দিয়া বাহির হইতেই একজন আদালতের পেয়াদা বেলিফের দৃষ্টি সেদিকে আকৃষ্ট করিল। বেলিফ সাক্ষী দুজনকে ডাকিয়া বলিল—এই দেখুন মশায়, ওই মেয়েলোকটা হোটেল থেকে জিনিস নিয়ে যাচ্ছে, এটা বে-আইনী । আমি পেয়াদাদের দিয়ে আটকে দিচ্ছি আপনাদের সামনে । পেয়াদারা গিয়া বাধা দিয়া বলিল—বালতি রেখে যাও— পরে আরও কাছে গিয়া হাক দিয়া বলিল—শুধু বালতি নয় বাবু, বালতির মধ্যে পেতল কাসার বাসন রয়েছে । পদ্মঝি ততক্ষণে বালতি দুটা প্রাণপণে জোর করিয়া আঁটিয়া ধরিয়াছে। সে বলিল—এ বাসন আমার নিজের—-হোটেল চক্কত্তি মশায়ের, আমার জিনিস উনি নিয়ে এসেছিলেন, এখন আমি নিয়ে যাচ্ছি । পেয়াদারা ছাড়িবার পাত্র নয় । অবশ্য পদ্মঝিও নয় । উভয় পক্ষে বাকৃবিতণ্ডা, অবশেষে টানাহেঁচড়া হইবার উপক্রম হইল। মজা দেখিবার লোক জুটিয়া গেল বিস্তর । একজন মহাজন পাওনাদার বলিল--অামি এই সকলের সামনে বলছি, বাসন নামিয়ে যদি না এাথে। তবে আদালতের আইন অমান্ত করবার জন্তে আমি তোমাকে পুলিশে দেবো । একজন সাক্ষী বলিল –তা দেবেন কেমন করে বাপু ? ওর নামে তো ভিঞ্জি মেই আদালতের । ও আদালতের ডিক্রি মানতে যাবে কেন ? বেলিফ, বলিল—তা নয়, ওকে চুরির চার্জে ফেলে পুলিশে দেওয়া চলবে। এ হোটেল এখন মহাজন পাওনাদারের । তার ঘর থেকে অপরের জিনিস নিয়ে যাবার রাইট কি ? ওকে জিজ্ঞেস করে ও ভালোয় ভালোয় দেবে কিনা— পদ্মঝি তা দিতে রাজা নয়। সে আরও জোর করিয়া আঁকড়াইয়া আছে বালতি দুটি । বেলিফ, বলিল—কেড়ে না ও মাল ওর কাছ থেকে—বদমাইশ মাগী কোথাকার—ভাল কথায় কেউ নয় ! পেয়াদীরা এধার বীরদপে আসিয়া গেল । পুনরায় একচেটি ধস্তাধস্তির স্বত্রপাত হইবার উপক্রম হইতেই হাজারি দেখানে গিয়া দাড়াইয়া বলিল–পদ্মদিদি, বাসন ওদের দিয়ে Wኵe ! _ লজ্জায় ও অপমানে পদ্মঝিয়ের চোখে তখন জল আসিয়াছে। জনতার সামনে দাড়াইয়া এমন অপমানিত সে কখনো হয় নাই। এই সময় হাজারিকে দেখিয়া সে হাউ হাউ করিয়া কাদিয়া ফেলিল । –এই দেখো না ঠাকুর মশায়, তুমি তো কতদিন আমাদের হোটেলে ছিলে—এ আমার জিনিস না ? বলে না তুমি, এ বালতি কার? হাজারি সাত্বনার স্বরে বলিল—কেঁদে না এমন ক’রে পদ্মদিদি। এ হোল আইনআদালতের ব্যাপার। বাসন রেখে এসো ঘরের মধ্যে, আমি দেখছি তারপর কি ব্যবস্থা করা वiग्न