পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দু-হোটেল YS কাছে সেও তার মনিবের সমান দরের লোক, এক রকম মনিবই। যদু বাড়ুৰ্য্যে বলিল, আর কে আছে ঘরে ? যদুর আসিবার উদ্দেশ্ব বুঝিতে না পারিয়া হাজারি ততক্ষণে মনে মনে আকাশ-পাতাল ভাবিতেছিল—বিনীত ভাবে বলিল—কেউ নেই বাবু, আমিই আছি। মতি ছিল, ছোট বাজারে যাত্রা– যদু বঁাডুষ্যে বলিল—চল ঘরের মধ্যে বসি । তোমার সঙ্গে কথা আছে । ঘরের মধ্যে বসিয়া যদু বাড়ুষ্যে বেচু চক্কত্তির গদিতে বসিয়া একবার চারিদিকে চাহিয়া লইয়া বলিল—তুমি এখানে কত পাও ঠাকুর ? —আজ্ঞে সাত টাকা আর খোরাকী । —কাপড চোপড দেয় ? – আজ্ঞে বছরে দু’খানা কাপড । বছ বাড়ুধ্যে কাশিয়া গলা পরিষ্কার করিয়া বলিলেন—শোন, আমার হোটেলে তুমি কাজ করতে যাবে ? তোমায় দশ টাকা আর খোরাকী দেবো। বছরে তিনখান কাপড় পাবে। ধোপা-নাপিত, তেল-তামাক । যাবে ? হাজারি দস্তুরমত অবাক হইয়া গিয়াছিল। কিছুক্ষণ সে কথা বলিতে পারিল না। তার পর বলিল—বাবু, এখন তো কিছু বলতে পারি নে। ভেবে বলবো । –ভেবে বলাবলি আর কি, আমার যে কথা সেই কাজ। তুমি কাল থেকে এ হোটেল -ছেডে আমার হোটেলে চলে, কাল থেকেই আমি নিতে রাজি। তবে হ্যা, বেচু চকত্তির সঙ্গে আমি আসরস করতে চাইনে। সেও ব্যবসাদার, আমিও ব্যবসাদার । হাজারির মাথা যেন ঘুরিয়া উঠিল। কেহ দেখিতেছে না তো ? পদ্ম ঝি কোথাও আড়ি পাতিয়া নাই তো ? সে তাড়াতাডি বলিল—এখন আমি কোন কথা বলতে পারবো না বাৰু। কাল ভেবে বলবো । কাল রাত্তিরে এমন সময় আসবেন । যত্ন বঁাডুধ্যে চলিয়া গেল। হাজারি গাজা খায় এ খবর একেবারে মিথ্যা নয়, তবে খায় খুব সঙ্গোপনে এবং খুব কম। আজ এ ব্যাপালের পরে সে এক কলিকা গাজা না সাজিয়া পারিল না । সংসারে কেহ এ পর্য্যন্ত তাহাকে ভাল লোক বা ভাল রণধে বলিয়া খাইবার সঙ্গে সঙ্গে তাহার পুরস্কার দিতে চায় নাই—খদেরর মুখের ফাকা কথায় পেট ভরে না তো ! যদুবাবু নিজে বাড়ী বহিয়া আসিয়াছেন, তাহাকে দশ টাকা মাহিনীর চাকরি (মায় খোরাকী ধোপা নাপিত ) দিতে । এতদিন রাণাঘাটের বাজারে আছে—কখনও কাহারও সঙ্গে মেশে না সে—মিশিতে ভালও বাসে না । তাহার জীবনের আশ। যে-ট, সে-টা দশজনের সঙ্গে মিশিয়া আডড দিয়া গাজা খাইয়া বেড়াইলে পূর্ণ ইষ্টবে না। তাঙ্গকে খাটিতে হইবে, বাজার বুঝিতে হইবে, হিসাব রাখা শিখিতে হইবে, একটা ভাল হোটেল চালাইবার স্বাঙ্গ কিছু স্থলুক সন্ধান সব সংগ্ৰহ করিতে