পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>や বিভূতি-রচনাবলী মুখে বলিল, বেঁচে থাক মা, মেয়ে না হ’লে বাপের জন্তে এত আত্তি দেখায় কে ? ভারী চমৎকার কথা । আমি পেতে শুয়ে বঁাচবে! এখন। ভারী চমৎকার কাথা। বেশ, বেশ । কুষম বলিল—জ্যাঠামশায়, আপনি তো বললেন মেয়ে না হ’লে কে করে—কিন্তু আমিও বলছি, বাবা না হ’লে হোটেল থেকে নিজের মুখের ভাতের থালা কে মেয়েকে দেয় লুকিয়ে— শ্রাবণ মাসের সেই উপবাস্ত বাদলায়— இ কুম্বমের চোখ দিয়া জল গড়াইয়া পড়িতে সে বঁা-হাতে আঁচল দিয়া চোখ মুছিয়া চুপ করিয়া মাটির দিকে চাহিয়া রহিল। কিছুক্ষণ পরে বলিল—মাথার ওপর ভগবান জানেন— আর কেউ জানে না—আপনি আমার জন্যে যা করছেন। আপনি ব্রাহ্মণ, দেবতা—আমি ছোট জাতের মেয়ে—আমার ছোট মুখে বড় কথা সাজে না, তবে আমিও বলচি ওপরের দেনেওয়ালা আপনাকে ভাতের থালার বদলে মোহরের থালা যেন দেন । আমিও ধেন দেখে মরি। বলিয়াই সে আসিয়া হাজারির পায়ে গড় হইয়া গলায় আঁচল দিয়া প্রণাম করিল। সেদিন ছিল বেশ বর্ষ। হাজারি দেখিল, হোটেলে গদির ঘরে অনেকগুলি ভদ্রলোক বসিয়া আছে। অন্যদিন এ ধরনের খদের এ হোটেলে সাধারণতঃ আসে না—হাজারি ইহাদের দেখিয়া একটু বিস্মিত হইল । বেচু চকত্তি ডাকিল-হাজারি ঠাকুর, এদিকে এস—হাজারি গদির ঘরে দরজায় আসিয়া দাড়াইলে ভদ্রলোকদের একজন বলিলেন—এই ঠাকুরটির নাম হাজারি ? বেচু চকত্তি বলিল-ই বাবু, এরই নাম হাজারি। বাবুট বলিলেন—এর কথাই শুনেচি। ঠাকুর তুমি আজ বর্ধার দিনে আমাদের মাংস পোলাও রোধে ভাল করে খাওয়াতে পারবে ? তোমার আলাদা মজুরী যা হয় দেবো । বেচু বলিল—ওকে আলাদা মজুরী দেবেন কেন বাবু, আপনাদের আশীৰ্ব্বাদে আমার হোটেলের নাম অনেক দূর অবধি লোকে জানে। ও আমারই ঠাকুর, ওকে কিছু দিতে হবে না। আপনারা বা হুকুম করবেন তা ও করবে । এই সময় পদ্ম ঝি বেচু চকত্তির ডাকে ঘরে ঢুকিল। বেচু চৰুত্তি কিছু বলিবার পূৰ্ব্বে জনৈক বাবু বলিল—বি, আমাদের একটু চা ক’রে খাওয়াও তো এই বর্ধার দিনটাতে। না হয় কোনো দোকান থেকে একটু এনে দাও । বুঝলেন চন্ধত্তি মশায়! আপনার হোটেলের নাম অনেক দূর পর্য্যস্ত ষে গিয়েচে বরেন—সে কথ। মিথ্যা নয়। আমরা যখন আজ শিকারে বেরিয়েছি, তখন আমার পিসতুতে ভাই ব’লে দিয়েছিল, রাণাঘাট স্বাচ্চ, শিকার ক’রে ফেরবার পথে রেল-বাজারের বেচু চক্ষত্তির হোটেলের হাজারি ঠাকুরের হাতে মাংস খেয়ে এসো। তাই আজ সারাদিন জলায় আর বিলে পাখী মেরে বেড়িয়ে বেড়িয়ে ভাবলাম, ফিরবার গাড়ী তে রাত দশটায়। তা এ বর্ষার দ্বিনে গরম