পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী দিন তিনেক পরে জ্যোতিবিনোদ ছুটির ঘণ্টা পড়িতেই বাহিরে যাইতেছেন, যছবাবু ফোর্থ ক্লাস হইতে ভাক দিয়া বলিলেন, কোথায় যাচ্ছ, ও জ্যোতির্বিবনোদ ভায়া ? —একটু কাজ আছে। কেন দাদা ? -नां ङांई तलहि, ७१महे फिद्रात ? —ফিরতে দেরি হবে। খামবাজারে যাব একবার। —s 1 কিন্তু কী কারণে ওয়েলেসলির মোড় পৰ্য্যস্ত গিয়া জ্যোতিবিনোদের খামবাজার যাওয়ার প্রয়োজন হইল না। স্বতরাং তিনি ফিরিয়া তেতলায় নিজের ঘরে ঢুকিলেন। টীচার্স-ক্লমের পাশেই ছোট ঘর, যাইবার সময় দেখিলেন, যদুবার টীচার্স-রুমে কী করিতেছেন। কৌতুহলী হইয়া ঘরে ঢুকিয়া বলিলেন, কী, একা এখানে বসে এখনও দাদা ? যদুবাবু চমকিয়া উঠিয়া তাড়াতাড়ি কী যেন একটা ঢাকিতে চেষ্টা করিলেন, এবং পরে কথা বলিবার প্রাণপণ চেষ্টায় চোখ ঠিকৃরাইয়া অস্পষ্টভাবে গোড়রাইয়া কী যেন বলিতে গেলেন। জ্যোতিবিনোদ দেখিলেন, যদুবাবুর সামনে টেবিলের উপর শালপাতায় খান পাচ-ছয় লাল আটার রুটি ও কিছু ডাল—যন্ধুবাবুর মুখ রুটি ও ডালে ভর্তি। আশ্চৰ্য্য নয় যে, এ অবস্থায় তাহার মুখ দিয়া স্পষ্ট কথা উচ্চারিত হইতেছে না। যদুবাৰু ভীষণ আয়াসে ডালরুটির দলাকে জবা করিয়া কোন রকমে গিলিয়া ফেলিলেন এবং স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রাপ্ত হইয়। অপ্রতিভ মুখে বলিলেন, এই টিফিনের পরে এক-আধখানা বাড়তি রুটি ছিল, তাই বলি ফেলে দিয়ে কী হবে । ঠাকুরকে বললাম, দাও ঠাকুর— —বেশ বেশ, খান না । —তা ইয়ে—তুমি যদি খাও, কাল থেকে যদি বাড়তি থাকে, তোমার জন্যেও না হয়— জ্যোতির্বিবনোদ কী ভাবিয়া বলিলেন, কেউ আবার লাগাবে মি: আলমের কানে । যছবাৰু ষড়যন্ত্র করিবার স্বরে ও ভঙ্গিতে নিচু গলায় চোখ টিপিয়া বলিলেন, কেউ টের পাবে! তুমিও যেমন! যেখানে আধ মণ ময়দ মাখা হয় ডেলি, সেখানে ছখানা কি আটখানা কটির হিসেব কে রাখছে ? আর আমার হাতেই তো হিসেব। তুমি নাও। জ্যোতিবিনোদও নিৰ্ব্বোধ নন। তিনি বুঝিলেন, যদুবাবুর এ রুটি খাইতে হইলে ছুটির পরে নির্জন টীচার্স-রুম ভিন্ন আর স্থান নাই। সে রুমের পরেই জ্যোতিবিনোদের থাকিবার ক্ষুদ্র কুঠুরি, তাহাকে অংশীদার না করিলে যন্ধুবাবু উহা এক এক আত্মসাৎ কি করিয়া করিবেন ? সেই জন্যই যদুবাৰু অত আগ্রহের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করিতেছিলেন, জ্যোতিবিনোদ কোথায় যাইতেছে, অর্থাৎ এখনই ফিরিবে কিনা ! - ভাবিয়া চিস্তিয়া বলিলেন, তা যদি বাড়তি থাকে, তবে না হয়— যদুবাৰু উৎসাহের সঙ্গে বলিলেন, বাড়তি আছে—বাড়তি আছে—হয়ে যাবে। খান আটুেকু করে রুটি তোমার জন্তে, তা সে এক রকম হবে এখন। জলখাবারটা বিকেলবেলার, বুঝলে না ? পেটে খিদে মুখে লাজ-ন ভায়, ও কোন কথা নয়।