পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অমুবর্জন তিন-চার দিন বেশ খাওয়া-দাওয়া চলিল দুইজনের। জ্যোতিবিনোদ দেখিলেন, যদুবাৰু ক্রমশ রুটির সংখ্যা ও ডালের পরিমাণ বাড়াইতেছেন। একদিন শালপাতা খুলিলে দেখা গেল, বাইশখান। রুটি ও প্রায় সের খানেক ডাল তাহার ভিতরে । জ্যোতির্বিবনোদ ভয় পাইয়া বলিলেন, এ নিয়ে কথা হবে দাদা। এত কেন ? —আরে, নাও না খেয়ে। রাত্রের খাওয়াটাও এই সঙ্গে না-হয়—সে পয়সাটা তো বেঁচে গেল-এ পেনি সেভড ইজ এ পেনি গটু, অর্থাৎ— —কিন্তু দাদা, আমার শরীর খারাপ, আমি এত খেতে পারব না যে। —বেশ, বেশ, যা পার খাও! না-হয় যা থাকবে, আমিই খাব-ফেলা যাচ্ছে না। এদিকে মি: আলমের ষড়যন্ত্র বেশ পাকিয়া উঠিল। মিঃ আলম কয়েকজন মেম্বরের বাড়ী গিয়া তাহাজের বুঝাইলেন, সাহেবকে না তাড়াইলে স্কুলের উন্নতি সম্ভব নয়। মাটি য়ের দিন পর্যন্ত ধাৰ্য্য হইয়া গেল। স্থির হইল, ডাক্তার গাজুলী সে দিন সাহেবকে সরাইবার প্রস্তাব কমিটীতে উঠাইবেন ; কমিটীর অন্যতম স্বদেশী মেম্বর সাতকড়ি দত্ত, জনৈক লোহাপটির দালাল সে প্রস্তাব সমর্থন করিবে । রামেন্দুবাৰু গোপনে ক্ষেত্রবাবুকে বলিলেন, মি: আলম এদিকে বেশ হেসে কথা বলে হেডমাস্টারের সঙ্গে, আর একদিকে এ রকম যড়যন্ত্র করে—এ অত্যন্ত খারাপ। আমার মনে হয়, হেডমাস্টারকে ওয়ানিং দিয়ে দিলে ভাল হয়। —কে দেবে ? —আমি দিতে পারতাম, কিন্তু আমার উচিত হবে না। আমি মি: আলমের নীটিংয়ে প্রথম দিন ছিলাম । –তাই কী ? অার তো ছিলেন না। আপনিই গিয়ে বলুন। —সেটা ভদ্রলোকের কাজ হয় না। আর কাউকে দিয়ে বলাতে পারেন তো বলান। --আর কে যাবে ? এক আপনি, নয় তো নারাণবাবু । , —বুড়ো মাহুষকে আর এর মধ্যে জড়িয়ে লাভ নেই। 'হি ইজ টু গুড়, এ ম্যান ফর অল দীজ-নিরীহ বেচারী ওঁকে আর এ বয়সে কেন এর মধ্যে ? —আমি বলব ? —আপনার উচিত হবে না। দু-মুখো সাপের কাজ হবে। —তবে লেট ফেট, টেক ইটসকোর্স– —তাই হোক । কিন্তু শেষ পৰ্য্যস্ত ক্ষেত্রবাবু ও জ্যোতিবিনোদ রাত দশটার পরে হেডমাস্টারের দোরে স্বা দিলেন। সাহেব খয়রাগড়ের রাজকুমারকে পড়াইয়া সবে ফিরিয়াছেন। বলিলেন, কে নারাণবাৰু ?