পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবর্তন —কেউ দেখচে ? —না, দেখে নি। পয়সা নেই, সত্যি কথা বলতে কি ক্ষেত্রবাৰু, আজ তিন দিন ঘরে এক পয়সাও নেই। ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম রাধাকৃষ্ণ কর অ্যাও সন্সের দোকানে। আমার সেই —সেই—সেই—(রাখালবাৰু একটু ইাপ জিরাইলেন) রচনার বইখানা দৃশ কপি পাঠিয়ে দিযে একখানা লিখে দিলাম, বলি—এখন বইগুলো রেখে দাম দাও,আমি পয়ত্রিশ পাসেণ্ট কমিশন দেব, এখন আমার হাত বড় টানাটানি যাচ্ছে—তা ব্যাটার বই ফেরত দিয়েছে । ৪ বই নাকি কম বিক্রি—ও এখন বিক্রি হবে না। আপনি তো জানেন, চেতলা স্কুলের হেডমাস্টার —মব ব্যাকরণ স্বধা প্রথম ভাগ— - আচ্ছ, আপনি একটু বিশ্রাম করুন। —বিশ্রাম আমি করছি সারাদিনই। কিন্তু আমি বলি, দেখুন ক্ষেত্রবাবু, যারা জিনিস চেনে, তাদের কাছে জিনিসের কদর ! চেতলা স্কুলের হেডমাস্টার নব ব্যাকরণ সুধা দেখে বললে, মিত্তির মশাই, এমন বই একালে কে লিখছে আপনি ছাড়া ? আপনাকে বলেছি বোধ হয় ক্ষেত্রবাবু, ব্যাকরণে ছাত্রবৃত্তিতে ফাস্ট স্ট্যাগু করি, মেডেল আছে। দেখতে চান ভো দেখাতে পারি। —না, দেখাতে হবে কেন ? আপনি ঠিকই বলছেন। তা চেতলা স্কুলে বই ধরালে আপনার ? —ন। বললে—আগে যদি আসতেন ! কাকে বুঝি কথা দিয়ে ফেলেছে। আসছে বারে প্রমিল করেছে ধরিযে দেবে। আর ওই শাকারিটোলা হাই স্কুলে রচনাদর্শখানা পাঠাতে বলেছিল—নমুনা। কিন্তু নমুনা পাঠিয়ে হয়রান। বই ধরাবেন না, নমুনা পাঠাও— ক্ষেত্রবাবু বলিলেন, ওসব আমরাও জানি। বই ধরাবার ইচ্ছে নেই, বই পাঠান— রাখালবাবু উঠিয়া বসিবার চেষ্টা করিয়া পাশের তাকে হাত বাড়াইতে গেলেন। —আপনাকে দেখাই, আর একখানা নীচের ক্লাসের ব্যাকরণ,লিখচি—আপনাকে দেখাই —খাতাখানাতে লিখছিলাম— o কাশির বেগে রাখালবাবুর খাভা বাহির করিবার চেষ্টা ব্যর্থ হইল। ক্ষেত্রবাবু বলিলেন, থাক থাক, এখন রাখুন। —বড় কষ্ট পাচ্ছি। কেউ নেই, কাকে বলি ! তাই ছেলেটাকে প্রথমে আপনার স্কুলে পাঠাই, সেখানে দরোয়ান আপনার বাসার ঠিকানা বলে দিয়েছে, তাই বাসায় গিয়েছিল। . এখন কী করি, একটি পরামর্শ দিন দিকি ক্ষেত্রবাবু! —তাই তো। খুবই বিপদ । বাসাতে কে কে আছেন ? —আমার স্ত্রী, দুটি ছোট ছোট ছেলে, এক বিধবা ভগ্নী, তার একটি মেয়ে—এই। রোজ ছুটি করে টাকা হলে তবে সংসার বেশ চলে। এক পয়স আয় নেই, তার ছটাকা-কী করা যায় বলুন ! খেতে পায় নি বাড়ীতে আজ ছু দিন। আপনার কাছে খুলে বলতে -