পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অল্পবৰ্ত্তন --বেশী দিন চলবে বলে মনে হয় না। --স্বধীরকে জানুয়ারি মাসে ক্লাসে উঠিয়ে দেন যদি, তবে ট্রান্সফার এবার না হয় থাক। –তাই হবে। ওকে ক্লাস নাইনে উঠিয়ে দেওয়া যাবে। রামেন্দুবাৰু হৃষ্টমনে ফিরিতেছিলেন । কারণ, কৰ্ত্তব্য নিখুঁতভাবে সম্পাদন করিবার একট। আনন্দ আছে। পথের ধারে একস্থানে দেখিলেন অনেকগুলি লোক জটলা করিয়া উচু মুখে কী দেখিতেছে। রামেন্দুবাৰু গিয়া বলিলেন, কী হয়েছে মশায় ? একজন আকাশের দিকে আঙুল দিয়া দেখাইয়া বলিল, দেখুন তো স্তার, ওই একখান। এরোপ্লেন-ওখানা যেন কী রকমের না ? , রামেন্দুবাৰু কিছু দেখিতে পাইলেন না। বলিলেন, কই মশায়, কিছু তো— দুই-তিন জন অধীরভাবে বলিল, আঃ, দেখতে পেলেন না ? এই ইদিকে সরে আস্থন— सई-eहैতবুও রামেন্দুবাৰু দেখিতে পাইলেন না, একটা নক্ষত্র তো ওটা । সবাই বলিয়া উঠিল, ওই মশায়, ওই। নক্ষত্র দেখছেন তো একটা ? ওই ! ও নক্ষত্র নয়—জাপানী বিমান । রামেন্দুবাৰু সাহসে ভর করিয়া বলিলেন, কিন্তু নক্ষত্র তো আরও অনেক— লোকগুলি রামেন্দুবাবুর মূঢ়তা দেখিয়া দস্তুরমত বিরক্ত হইল! একজন বলিল, আচ্ছা, এটা কি নক্ষত্র ? নীল মত আলো দেখলেন না ? চোখের জোর থাকা চাই। ও হল সেই, বুঝলেন? চুপি চুপি দেখতে এসেছে— আর একজন চিন্তিত মুখে বলিল, তাই তো, এ যে ভয়ানক কাগু হল দেখছি। পূর্বের লোকটি বলিল, কলকাতায় থাকা আর সেফ, নয় জানবেন আদৌ। সবাই তাহাতে সায় দিয়া বলিল, সে তো আমরা জানি । যে-কোন সময়—এনি মোমেন্ট বোমা পড়তে পারে। রামেন্দুবাবু সে স্থান হইতে সরিয়া পড়িলেন। - পরদিন স্থলে মাস্টারদের মধ্যে যথেষ্ট ভয় ও চাঞ্চল্য দেখা গেল। যে যে পাড়ায় থাকেন, সেই সেই পাড়া প্রায় খালি হইতে চলিয়াছে, মাস্টারদের মধ্যে অনেকের যাইবার স্থান নাই। যছবাৰু চায়ের মজলিসে বলিতেছিলেন, সবাই তো যাচ্ছে, আমি যে কোথায় ঘাই ! ক্ষেত্রবাবু বলিলেন, আমারও তাই দাদা। আমার গ্রামে বাড়ীম্বর সারানো নেই— কতকাল ঘাই নি। সেখানে গিয়ে ওঠা যাবে না। - —তবুও তোমার তো আস্তান আছে ভায়া, আমার যে ভাও নেই। চিরকাল বাসায় থেকে বাড়ীম্বর সব গিয়েছে। এখন যাই কোথায় ? জ্যোতিবিনোদ বলিল, আমার বাড়ী থেকে টেলিগ্রাম এসেছে, চিঠির পর চিঠি আসছে— বাড়ী যাবার জন্তে। বাড়ী থেকে লিখছে, চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে এস। o হেডপণ্ডিত বলিলেন, কাল শেয়ালদা ইষ্টিশানে কী ভিড় গিয়েছে, হে! গাড়ীতে উঠতে