পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ সকালে সব পাললি—এখন ওরা বড়লোক, এই দিনকতক আগেও পুতুলের বিয়েতে হাজার টাকা খরচ করেছে। ফুলশয্যের তত্ব করেছিল, দশজন ঝি চাকর মাথায় করে নিয়ে গেল, মায় রূপোর দান-সামগ্ৰী, খাট বিছান এস্তোক ! ওদের কথা বাদ দিন। এখন আমরা যাব কোথায় ? —সেই ভাবনা তো আমারও, ভাবছি তো । গরীব স্কুল-মাস্টার— —গরীব তো বটেই, যাবার জায়গাও তো নেই। —আপনার দেশে বাড়ীম্বর— রাখালবাবু হাসিয়া বলিলেন, দেশই নেই, তার বাড়ীম্বর ! দেশ ছিল ন'ঙ্গে জেলায়, কাচড়াপাড়া নেমে যেতে হয়। ছেলেবেলায় বাবার সঙ্গে গিয়েছিলাম। সে সব কিছু নেই। বড় হয়ে আর যাই নি, এই কলকাতাতেই— —আমারও তো তাই । e পাচী পান আনিয়া রাখিয়া গেল । —অনেক পয়সা খরচ করে বই ছাপালাম, চার-পাচ শো টাকা দেন এখনও বাজারে। এই হাঙ্গামাতে যদি বই বিক্রি কমে যায়, তবে তো পথে বসতে হবে। আপনাদের ভরসাতেই— —কিছুই বুঝছি নে, কী যে হবে। —আমাদের এখানে কিছু হবে না, কী বলেন? যুদ্ধ হচ্ছে ফিলিপাইনে আর হংকংয়ে, তার এখানে কী ? —সিঙ্গাপুর ডিঙিয়ে আসা অত সোঙ্গা নয়। —তবে লোক পালাচ্চে কেন ? —প্যানিক—ভয় ! প্যানিক একেই বলে। আচ্ছা উঠি, রাত হল মিত্তির মশাই। —আর একটু বসবেন না? আচ্ছা, তা হলে—ধ্য, একটা কথা। অানা আষ্ট্রেক পয়সা হবে ? ... • পকেটে যাহা কিছু খুচরা ছিল, তক্তাপোশের উপর রাখিয়া ক্ষেত্রবাবু বাহিরের মূক্ত বাতাসে আসিয়া হাপ ছাড়িয়া যেন বঁাচিলেন । ‘স্পেশাল টেলিগ্রাফ’ কাগজ বাহির হইয়াছে, কাগজওয়াল ফুটপাথ ধরিয়া ছুটিতেছে। ক্ষেত্রবাৰু একজনের হাত হইতে কাগজ লইয়া দেখিলেন—হংকং অবরুদ্ধ। চীনসমূত্রে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস ! ক্ষেত্রবাবু কেমন অন্যমনস্ক হইয়া পড়িলেন। পরদিন স্কুলে হেডমাস্টার সব মাস্টারকে আপিলে ডাকিলেন। জরুরী নীটিং। : , হেডমাস্টার এ বছরের পরীক্ষার লম্বা রিপোর্ট লিখিয়াছেন, সকলকে পড়িয়া শোনাইলেন। প্রত্যেক শিক্ষকের নিকট হইতে রিপোর্ট লওয়ু হয়, পরীক্ষার কাগজ ৰেখার পর। সেই