পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫిఱ বিভূতি-রচনাবলী —রক্ষে করে। ন’বেী—তুমিও বড় বড় কথা বলতে শুরু করলে নাকি, সেই মাগীর মত ? মুংলি এ জন্মেই আমার মেয়ে—আর জন্ম-টন্ম ছেড়ে দাও । —কে মাগী, কার কথা বলচো— —সে বলবো এখন সব । ইপি ছেড়ে বেঁচেছি দেশে এসে-বাবাঃ– কাজু হেসে বল্পে—না:, ঠাকৃমাকে নিয়ে আর পারা গেল না—এমন নাস্তিক—কাশীপ্রাপ্তি অদৃষ্ট থাকলে তো ? —তুই ভাই বল, ন'বে বলো—আমার এই ভিটেতেই যেন তোদের কোলে শুয়ে সকলের কাছ থেকে বিদেয় নিয়ে যেতে পারি। • কাশী পেরাপ্তিতে দরকার নেই—এই ভিটেই মামার গয়৷ কাশী। তিনি এই উঠোনের মুক্তিকেতে শুয়েছিলেন ওই তুলসীতলায়—আমাকেও তোর। ওখানে— আঁচলের খুঁট দিয়ে দ্রব ঠাকরুণ চোখের জল মুছলেনু । বেলা যায় যায়-আষাঢ়াস্ত সুদীর্ঘ দিনমানের শেষে স্থৰ্য্য ঢলে পড়েচে পশ্চিম দিকের নিবিড় বাশবনের আড়ালে। ঘেটকোল ফুল কোথাও জঙ্গলে ফুটেচে, বাতাসে তার কটু উগ্র গন্ধ। দ্রব ঠাকরুণের মন শাস্তিতে, আনন্দে, উৎসাহে পূর্ণ হয়ে গেল। এগারে বছরের নববধূ এই বাড়ীর উঠানে পা দিয়েছিলেন, এখন তার বয়েস তিন কুড়ি ছয়। কনক হাসিমুখে এসে দাড়িয়ে বল্লে—ঠাকুমা ভালো আছেন ? এয়েচেন শুনে ছুটে দেখনি অ্যালাম-আমাদের কথা মনে ছিল ? ক্যানভাসার কৃষ্ণলাল চাকুরী গেল। এত করিয়াও কৃষ্ণলাল চাকুরী রাখিতে পারিল না। সকাল হইতে রাত দশট। পর্যন্ত (ডাউন খুলনা প্যাসেঞ্জার,১০-৪৫ কলিকাতা টাইম ) টিনের স্কটকে হাতে শিয়ালদ” হইতে বারাসত এবং বারাসত হইতে শিয়ালদ’ পর্যন্ত তাতের মাকু'র মত যাতায়াত করিয়া ও ক্রমাগত দত্তপুকুরের বাতের তেল, দত্তপুকুরের বাতের তেল-বাত, বেদনা, ফুলো, কাটা ঘ, পোড়া ঘা, দাত কনকননি, এক কথায় যত রকম ব্যথা, শূলানি, কামড়ানো আছে সব এক নিমেষে চলে যাবে—আজি চব্বিশ বছর এই লাইনে ওষুধটি প্রত্যেক ভদ্রলোক ব্যবহার করচেন, সকলেই এর গুণ জানেন—” বলিয়া চিৎকার করিয়াও চাকুরী রাখা গেল না। সেদিন বস্ব মহাশয় (ইণ্ডিয়ান ড্রাগ সিণ্ডিকেটের মালিক নৃত্যগোপাল বস্ব ) কৃষ্ণলালকে ডাক দিয়া বলিলেন—পাল মশায়, কাল রাত্রের ক্যাশ জমা দেন নি কেন ? --আজে, আজে—অনেক রাত হয়ে গেল—খুলনার ট্রেন-প্রায় বিশ মিনিট লেটু। —দেখুন, আগেও আমি অন্তত সতেরো বার আপনাকে সাবধান করে দিয়েচি। খুলনা ট্রেন দশট, একুশে স্টেশনে আসে। আমি সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত অফিসে বসে ছিলাম শুধু