পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণলাল বলিল—গোলাপী, চাকরীটা গেল ! গোলাপী বিস্ময়ের মুরে বলিল—সে কি গা ! —বড়বাবু রাগ করেচে, কাল ক্যাশ জমা দিইনি বলে । —কি করলে সে টাকা ? —খরচ হয়ে গেল । —কোথায় খরচ হয়ে গেল—কিসে খরচ হয়ে গেল ? তোমার এখনও দোষ গেল না তা ওরা কি করে রাখে তোমায় ? কাল কোথায় গিয়েছিলে ? —সে খরচ নয় গোলাপী । দক্ষিণেশ্বর সেদিন যাওয়ার দরুন দেন ছিল মনে নেই ? কাবুলীর কাছ থেকে টাকা নিইনি ? রাত দশটার পরে ইষ্টিশনের গেটে আমায় ধরেচে। কপী দেও। শেষে ভাবলাম কি ছোরা মারবে না কি ? ভয়ে পড়ে দিয়ে দিলাম টাকা । কাবুলীর দেন, ও হজম করা কঠিন। 鍾 —ত নেও বেশ হয়েচে । এখন খাওয়া হয়েচে, না হয়নি ? আমার আদেষ্টে বি-গিরি নাচ চে সে তো দেখতে পাচ্চি। বল্প, পাড়াগায়ের দিকে চলো—কোথাও একখানা খরদোর বেঁধে দু’জনে থাকা যাবে—তা না, তোমার বাপু কলকেতা আর কলকেতা ! কলকেত ছেড়ে আমি থাকতে পারবো নি। এখন থাকো কলকেতায় ? কে এখানে খাওয়ায় দেখি । —জুটে যাবে, এখানেই জুটে যাবে। অত ভাবনার কারণ নেই— —তোমার এ বুড়ে বয়সে চাকুরী নিয়ে তোমার জন্যে বসে আছে ! এখন আর কি তোমার হাত পা নেড়ে বক্তিমে করবার গতর আছে নাকি ? —দেখিয়ে দেবো গোলাপী, দেখবি ? ভদ্রমহোদয়গণ, এই সেই বিখ্যাত আদি ও অকৃত্রিম দভপুকুরের বাতের তেল-ইহা ব্যবহারে সর্বপ্রকার বাত বেদনা, মাথাধরা, দাত কনকননি, কাউর, ছুলি, কাটা ঘা, পোড়া ঘা— গোলাপী হাসিতে হালিতে বুলিল—থাক গো গোর্সাই, আর বিদ্যে দেখাতে হবে মা. সবাই জানে তুমি খুব ভালো বক্তিমে দিতে পারো—আহা, কি হাত পা নাড়ার ছিরি ! যেম থিয়েটারের এ্যাক্টো করচেন ! —তাহ’লে বল চাকুরীতে নেবে কিনা ? —নেবে ন! আবার ? একশো বার নেবে-আমি যাই এখন বি-গিরি ক’রে নিজের পেট চালাবার চেষ্টা দেখি –নিজেই খেতে পাবে না তা আমায় আর খাওয়াবে কোথেকে ! কি আদেষ্ট যে নিয়ে এসেছিলাম ! কৃষ্ণলাল চলিয়া যাইতে উষ্ঠত হইয়াছে দেখিয়া গোলাপী বলিল—বসে, ছুটে মুড়িটুড়ি মেখে দি—খেয়ে একটু চ খেয়ে যাও— জগত্য কৃষ্ণলাল বসিল । ৰলিল—তাহলে বক্তৃত এখনও দিতে পারি, কি বলে ? —মূেও, আর আদিখ্যেতায় কাজ নেই। দিতে পারে তো—সত্যি কথা যদি বলি তবে