পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રૂ.૭૦ বিভূতি-রচনাবলী আড়ৎWার এসেচে—ধান কিনে নিয়ে যাবে । বিয়ের খরচপত্র ধান বেচে করতে হবে কিনা ৷ ওর জ্যোঠমা বললেন—ও পুটি, আজ কোথাও বেরিও না। নাপিত ও-বাড়ী থেকে হলুদ মিয়ে আসবে, সেই হলুদ গায়ে দিয়ে তোমায় নাইতে হবে। 翰 এমন সময় সাধন জেলে এসে ভিজতে ভিজতে উঠোনে দাড়াল। হাত জোড় ক’রে মাথা নীচু করে প্রণাম করে বললে—প্রাতপেন্নাম। তার বাবা বললে—ও সাধন, বাবা তোমায় ডেকেছি যে একবার । আমার যে কিছু মাছের দরকার এই শনিবারে । কি জানি কেন, পুটির বুকটা দুলে উঠল । এই শনিবার—এই শনিবারে তা হলে সত্যিই তার— সাধন বললে—আঞ্জে, মাছের যে বডড গোলমাল যাচ্চে । গাঙে কি মাছ আছে ? ভূমের বাওড়ের মাছ সব যাচ্চে কলকাতায়। বিরাশি টাকা দর। এমন দূর বাপের জম্মে কোনও কালে শুনি fন রায় মশায় ৷ এক সের দেড় সের পোন৷ ইস্তক পড়তে পাচে না | মরগাঙে বাধাল দিয়েলাম—একদিন কেবল এক সাড়ে এগার সের গজাড় মাছ— পুটির বাবা বিস্ময়ের স্বরে বললে—সাড়ে এগার সের গজাড় ! এমন কথা ত কখনও শুনি নি— —অরিবৎ গজাড় রায় মশায় । মাছের এমন দর, গজাড় মাছই বিক্রি হয়েল দশ আনা সের | পুটি আর সেখানে দাড়াল না। মাকে এমন আজগুবি খবরটা দিতে ছুটল বাড়ীর মধ্যে। বিষ্টি একটু থেমেচে, একটু কোথাও বেরুতে পারলে ভালো হ’ত। তার জীবনে যে একটা আশ্চৰ্য্য ব্যাপার হতে চলেচে এ কথাটা কারও সঙ্গে আনন্দ করে বলাও চলে না। বেহায়া বলবে, নিন্দে করবে। কেবল বলা চলে তার সমবয়সী পাচি, আর ক্ষেস্তি জেলেনীর মেয়ে টুনির কাছে। আর একটা আশ্চৰ্য্য ব্যাপার-তার চেয়ে অন্তত সাত বছরের বড় লতিদিদির এখনও বিয়ে হয় নি—অথচ লতিদিকে সবাই বলে সুন্দরী, লতিদির বাপের অবস্থা ভালো ৷ লতিদি• লেখাপড়া জানা ভালো ! গান করে, ওর বাবা যখন কলকাতায় চাকুরী করত, তখন লতিদি স্কুলে পড়ত সেখানে। কত বই পড়ে বসে বসে দুপুর বেলা । পুটি ওদের বাড়ী যায় যখনই তখনই দেখে লতিদি বই মুখে বসে। পুটি ভাল লেখাপড়া জানে না, बहेप्प्रङ्ग নাম পড়তে পারে না, লতিদি একটু ঠ্যাকারে, সে লেখা পড়া জানে না বলে বুঝি আর মানুষ না ? 尊 তাকে বলে—তুই বই-টই নাড়িস নে পুটি। কি বুঝিস তুই এর আস্বাদ ? পুটি হয়ত বলে—এ কি বই বল না লতিদি ? —স্বা: যাঃ, আর বইয়ের খবরে দরকার নেই। শরৎ চাটুজ্যের নাম শুনেচিস্ ? কোথ। &ক শুনবি ? তোরা শুধু জানিস টেকিতে পাড় দিয়ে কি করে চিড়ে কুটতে হয়। তাই করগে ৰা—এদিকে কেন আবার ?