পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত २७¢ গায়ে হলুদ হয়ে গেল ? তা কই আমাদের একবার বলতেও তো হয় । এই ত বাড়ীর পেছনে বাড়ী— পুটি বললে—গেলেন না কেন বৌদি ? আমর। ত বারণ করি নি যেতে । শাক যখন বজিলো, তখনও যদি যেতেন— লতিকা ভাবলে, পুটি ছেলেমানুষ এ উত্তরটা দেওয়া ওর উচিত হ’ল না। এখানে ও কথা বলা ঠিক হয় নি। কিন্তু এর পরবত্তী ব্যাপারের জন্যে সে বা পুটি কেউ প্রস্তুত ছিল না। গাঙ্গুলীদের ছোটবোঁ মুখ লাল করে উত্তর দিলে—কি বললি ? যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা ? আমরা কখনও গায়ে হলুদ দেখি নি, শাকে ফু পড়লে অমনি কুকুরের মত ছুটে যাব তোমাদের বাড়ী পাতা পাততে। অত অংথার ভালো না রে পুটি। তোমার বীপের বড় ধানের গোল হয়েচে, না ? অমন বিয়ে আমরা কখনও কি দেখিচি জীবনে ? ছেলের না আছে চাল, নী চুলো—সংসারে মহিষ নেই বলে হাড়ি ঠেলতে নিয়ে যাচ্চে। ছেলের বিদ্ধে কত, তা জানতে বাকি নেই—এবার তো ম্যাট্রিক ফেল করেচে - এখানে লতিকা অার না থাকতে পেরে বললে—কে বললে ছোট বৌদি ? স্ববোধবাবুর পাশের খবর তো পাওয়া যায় নি ? —কেন পাওয়া যাবে না ? চিঠি এসেচে ফেল করেচে বলে—ওরা সে চিঠি লুকিয়ে ফেলেচে । বিয়ের আগে ও খবর জানাজানি হতে দেবে না। উনিই হাট থেকে চিঠি আনেন। পোষ্টকার্ডে চিঠি। উনি সন্দের পর স্ববোধদের বাড়ী দিয়ে এলেন। আমাদের চোখে ধূলো দেওয়া— পুটির চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে বিশ্বসংসার লেপে মুছে গিয়েচে । মুখর দৃপিত। ছোট বৌয়ের মুখের কাছে সে কি করে দাড়াবে। চেঁচামেচি শুনে মুখুয্যেগিনী ই৷ ই করে ছুটে এলেন, লতিকা ওর হাত ধরে নিয়ে ঘরের মধ্যে গেল । মুখুয্যেগিন্নী ঘরের মধ্যে এসে চাপা গলায় বললেন—আহা, ছেলেমানুষ—ওর সাধআহিলাদের দিনটা অমন করে বিষ ছড়াতে আছে—ছিঃ ছিঃ—দ্যাথ তো মা লতি কাগুটী— কাঠের পুতুলের মত আড়ষ্ট পুটির হাত ধরে ততক্ষণ লতিকা বলচে–চল চল পুটি তোকে বাড়ী দিয়ে আসি—ছিঃ, বৌদির কি কাণ্ড ! ও সব কথা মনে করিস নে, মিথ্যে কথা । চল পুটি—ভাই— e লতিকার গলার স্বরে ও কথার ভাবে কিন্তু পুটির মনে হ'ল লতিদিও এ খবরটা জানে— কি জানি হয়তো গায়ের সবাই জানে—সে-ই কেবল জানতো না এতক্ষণ। পথে পা দিয়েই লজ্জায় অপমানে সে ছেলেমানুষের মত কেঁদে ফেলে বললে—লতিদি, আমি কী বলেছিলাম ছোটবোঁদিকে ?—খারাপ কথা কিছু ?