পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

는 8 বিভূতি-রচনাবলী শেষ করতে পারতো, তার জন্যে দিনমানে দেউড়ি বদ্ধ করে গোলমাল বাধাবার চেষ্টা পাবে কেন ? পীতাম্বর হাজার হোক গোয়ালার ছেলে, আশি বৎসরে সাবালক হয় না। রাত্রের সেই স্ত্রীলোকটি একটু পরে এসে বল্পেন—বাবা, কুয়োর জল তুলে দিচ্চি। বেশ করে নেয়ে নাও। কিন্তু এবেলা কিছু খেয়ো না যেন ! আশ্চৰ্য্য হয়ে বল্লাম—খাব না কেন মা ? এ নিশ্চয়ই নরবলি না হয়ে যায় না ! স্ত্রীলোকটি বল্পেন—ম বলে ডেকেচ তো ? তা হ’লেই হয়ে গেল। কৰ্ত্তার কাছে সব গুনে । 彎 বলতে বলতে বৃদ্ধ এসে হাজির ৷ বল্পেন—সোজা কথা বলি শোনো । আমার একটি নাতনী আছে, সেটিকে তোমায় বিয়ে করতে হবে। সুন্দরী মেয়ে—তোমাকে এখুনি দেখানে হচ্চে। কোনো অনিষ্ট হবে না তোমার। মেয়ে কানা খোড়া নয়, দেখলেই বুঝতে পারবে । তোমার সঙ্গে চমৎকার মানাবে বলেই এ সম্বদ্ধ স্থির করেছি। আমার সামনে বজ্রপাত হলেও বোধ হয় তত আশ্চর্য্য হ’তাম না । বিয়ে করতে হবে, সে কেমন কথা ! বল্লাম—সে কি ! তা কেমন করে হয় ? --কেন হবে না ? তোমরা আমাদেরই পালটি ঘর। মেয়ে ভালো । তোমার অমতের কারণ কি ? গহনাপত্র সবই দেওয়া হবে । —আজ্ঞে তা হয় না । বৃদ্ধের মুখচোখের ভাব বদলে গেল। হঠাৎ অত্যস্ত কর্কশ ও রুক্ষস্বরে বলে উঠলো—ত। হয় না ? তা হতে হবে। আমি কে জানো ? আমার নাম ঈশ্বর রায়। আমার নামে সিজে-ডুমুর দ’ থেকে মগরার খাল পর্য্যন্ত লোকে থরহরি কঁপিতো একদিন। বিয়ে না করে এখান থেকে যাবার জো নেই তোমার। দেউড়িতে চাবি দেওয়া, ঘাড়ে ধরে বিয়ে দেওয়াবো, যদি সোজা আঙ্গুলে ঘি না ওঠে। গোপদাড়ি ওঠেনি, ছোকরা কার সঙ্গে কি বলচে তোমার খেয়াল নেই ? * আমি কাঠের পুতুলের মত রইলাম। বৃদ্ধ সেই স্ত্রীলোকটির দিকে চেয়ে বল্লে—যাও, জগদ্ধাত্রীকে নিয়ে এসো । জীলোকটি ঘরের মধ্যে ঢুকলেন এবং একটু পরে যখন মেয়েকে নিয়ে এলেন হাত ধরে, তখন সাক্ষাং জগদ্ধাত্রী প্রতিমার মতই তার রূপ ফুটে উঠলে আমার মূঢ় চোখের সামনে । যেমনি গড়ন, তেমনি লম্বা, তেমনি রং । নামেও জগদ্ধাত্রী, রূপেও জগদ্ধাত্রী, ব্যবহারেও তাই । এর পরে গল্প খুবই সংক্ষিপ্ত। এই মেয়েই তোমাদের ঠাকুরমা জগদ্ধাত্রী দেবী। পুণ্যবতী, শির্থের সিছুর নিয়ে চলে গিয়েচে আজ কত কাল, তোমাদের বাপ তখন ছ'বছরের। আর সেই ডাকাতের সর্দার ঈশ্বর রায় ছিলেন আমার দাদাশ্বশুর।