পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&Qや বিভূতি-রচনাবলী —আমার জন্যে একখানা টিকিট আনলে না কেন ? আর দেয় না? বেশ গান শুনতুম, দেখতুম কি হয়। কতকাল তো কোথাও বেরইনি। দেখা না যদি পাওয়া যায়— তাই অবিনাশ কাল শনিবারে আর একখানা রাঙা টিকিট এনেচে । খাওয়াদাওয়া সারাসোরা হয়ে গেলে আভা আর একটুও বসেনি। এক বালতি জল ওবেলা অতিকষ্টে মারামারি করে কলঘর থেকে সংগ্রহ করেছিল—নইলে বেল ছুটোর সময় গা ধোয়ার জল কোথায় পাওয়া যাবে ? সাত ঘর ভাড়াটের সঙ্গে একত্রে বাস, ন্যায্য নাইবার জল তাই মেলে না—ত। আবার অসময়ে শখের গা ধোওয়া ! কি কষ্ট যে জলের এ বাসাতে ! আভা আগে অাগে অবাকৃ হয়ে যেতো জলের কষ্ট দেখে। নদীর ধারের পাড়াগায়ের মেয়ে, মাপজোপকরেঞ্জস ব্যবহার করবারকল্পনা সে করতে পারতে না । এখন অবিশুি সব সয়ে গেছে। সাবান মেখে, গা ধুয়ে, সাজগোজ করতে বেলা আড়াইটে বেজে গেল। রিকশা ডাকতে আর একটু দেরি হ'ল । ওরা যখন বাসা থেকে বেরুনো, তখন পৌনে তিনটে। মাভা অধীর আগ্রহে চেয়ে আছে কতক্ষণে সেই রেলিং-দেওয়া পুকুরটা দেখা যাবে—যার ধারে—ঐ যে কি নাম জায়গাটার ? য়্যালবার্ট হল ? খুব বড় বাড়ী ? ক’তালা ? তোমাদের ক'তালায় সভা হবে ? কিন্তু সকলের চেয়ে আকর্ষণের বিষয়—কাগজের দোকানের লোকেরা মিলে এখানে আজ থিয়েটার করবে। থিয়েটার কি জিনিস, আভা কখনও দেখে নি। ওদের রিকৃশ যখন সংস্কৃত কলেজের কাছাকাছি এসে পৌঁছেচে, তখন দূরাগত সমুদ্রকল্পেীলের মত একটা শব্দ ওদের কর্ণগোচর হ’ল। অবিনাশ ঘাড় উচু করে যা চেয়ে দেখলে, তাতে তার তো চক্ষু স্থির । প্রথমটা ওর মনে হোল য়্যালবার্ট হলে ঢোকবার দরজার সামনে রাস্তার ওপর একটা বুঝি দাঙ্গ চলচে। প্রায় শ’ দুই আড়াই লোক এক জায়গায় জড় হয়ে একযোগে চীৎকার, ঠেলাঠেলি করচে—য়্যালবার্ট হলের কলেজ ষ্ট্রীটের দিকের সিড়ির মুখ থেকে জনতা শু্যামাচরণ দে স্ট্রটের মোড় পর্য্যস্ত বিস্তৃত। অবিনাশ বল্পে—এঃ, বডড ভিড় জমে গেছে দেখচি ! ভিড় ঠেলে রিকৃশা থেকে নেমে ওরা কোন রকমে দরজা পধ্যস্ত গেল বটে, কিন্তু আর এগোনো অসম্ভব। সিড়িটা লোকে লোকারণ্য । 叱 একটা দলের সঙ্গে ওর ওপরে খানিকদূর উঠতে গেল বাস্তসমস্ত হয়ে—আভা ভাবলে না জানি কি অদ্ভূত ব্যাপার চলচে ওপরে, যা দেখবার জন্যে এত ভিড়–কিন্তু দু-চার সিড়ির ধাপ উঠতে না উঠতে ওপর থেকে আর এক দলের ধাক্কা খেয়ে আভা ছিট কে এসে পড়ল দেওয়ালের গায়ে । ওদের চারিপাশে ভিড় জমে গেল ! আভার কপালে বেশ লেগেচে দেওয়ালে ঠুকে গিয়ে, ফুলে উঠেচে এরই মধ্যে। সবাই বলে—আহ, কোথায় লাগলো! জনতার কৌতুহলী দৃষ্টির সামনে আভা জড়সড় হয়ে গেল। একজন ঘৰ্ম্মাক্তকলেবর ভলাটিয়ার এসে অবিনাশকে