পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী وابوج —মন্দিরের সিংহদ্বারের কাছে আপনি একজন পুজারী ব্রাহ্মণের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমি আমার সখীদের সঙ্গে মন্দিরে ঢুক্চি—ম্বনেত্রা আমাকে দেখালে। স্বনেত্রীকে ডাকি— একটু পরে যে মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে রাজকন্যা ফিরলেন, তাকে প্রথম দিন হেলিওডোরাস এখানে দেখেচে । মুনেত্রা এসেই হেসে বল্লে—আপনাকে আমরা কতদিন এখানে খোজ করেচি—আমার সখী— রাজকন্ত তর্জনী তুলে শাসনের ছলে লজ্জারুণ মুখে বল্পেন—চুপ—সাবধান! স্বনেত্রা বল্পে—এখানে আর আসতেন না কেন ? যুদ্ধে গিয়েছিলেন বুঝি ? —হঁ্যা—কিন্তু ফিরে এসেও ত কতবার এসেচি ভদ্ৰে—রোজ রোজ তো আর পরের বাগানে আসতে পারি না ? স্বনেত্রী ভ্ৰকুঞ্চিত করে বল্লে—রোজ রোজ কি আমরা আপনার সন্ধান করতাম নাকি ? আপনি দেখচি বড় ধৃষ্ট—যান এখান থেকে আজ । জানেন এটা আমাদের সখীর মাতামহ সঞ্জয়দত্তের বাগান ? নাৎনীকে দিয়ে গিয়েচেন তিনি। এ শুধু আমার সর্থীর নিজস্ব বাগান—কার অনুমতি নিয়ে আপনি এখানে ঢুকেচেন জিজ্ঞেস করতে পারি কি ? রাজকন্যা স্বকণ্ঠ প্রতিবাদের স্বরে বল্পেন—ও কি স্বনেত্ৰা ! পরে হাসিমুখে হেলিওডোরাসের দিকে চেয়ে বল্লেন—আমাদের হূৰ্ণযুদ্ধের গল্প শোনাবেন ? \S) হয় দেবতা এ্যাপোলো বেলভেডিয়ার ! প্রতিদিন চতুরখযোজিত রথে সারা আকাশ পরিভ্রমণ করে সন্ধ্যায় ফিরে আসেন নিজ গৃহে—আপনি দেখেন নি হেলিওডোরাসের দুঃখ-•• ডিওন-পুত্র হেলিওডোরাসের ? আপনি কি এখন আবার দেখচেন না, কত দুপুরে কত সুন্দর শরৎ ও শীতের অপরাহ্লে বিদিশার পূর্বতন মহামাত্য সঞ্জয়দত্তের প্রাচীন উষ্ঠানবাটিকায় দুটি প্রেমিক হৃদয়ের গোপন লীলা-খেলা, শুনচেন না তাদের আনন্দগুঞ্জন ? মাধবীপুষ্পমঞ্জরীর জাড়ালে যার বিকাশ, উদ্যানব্রাটিকার অরণ্যছায়ায় তার ব্যাপ্তি—দুটি তরুণ হৃদয়ে সে সসঙ্কোচ প্রেম, বিচ্ছেদকালীন ব্যাকুলতী—দেখেন নি এ সব ? না দেখেচেন না দেখেচেন, হেলিওডোরাস আর আপনাকে চায় না । দুঃখের দিনে যিনি কৃপা করে তার মনোবাসন পূর্ণ করেচেন, সেই দেবতাই হেলিওডোরাসের একমাত্র উপাস্ত। ভারতবর্ষের পবিত্র মৃত্তিকায় সেই দেবতার অপার করুণার এ ইতিহাস সে অক্ষয় ক’ব্লুে রেখে যাবে—যদি গ্রীক রক্ত আর দেহে থাকে । একদিন মালবিক বল্লে--"হলিওডোর, বাবাকে বলো— —মহারাজ কি শুনবেন ? —ত হ’লেও তুমি বলো—গুপ্তভাবে আমাদের এমন সাক্ষাৎ আর বেশিদিন চলবে না। --আমিও তোমাকে চাই মালবিকা—আমারও চলবে না তোমাকে না পেলে—