পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sbrs বিভূতি-রচনাবলী পরে রোগী পরীক্ষা করিয়া বলিলেন—ছ, দেখবে কি, এর মধ্যে অনেক রোগ । কদিন এমন হয়েচে ? পুরুষটি এবার ক্ষীণস্বরে বলিল—ত বাবু অনেক দিন। আমি আজ তিন-চার মাস ভুগচি। আর এই কাশি, এ কিছুতি যাচ্ছে না— মেয়েটি হাত তুলিয়া অধৈৰ্য্যের স্বরে বলিল—তুমি চুপ করে দিকনি! খুব খামোতা তোমার! আমার হাড় মাস জালিয়ে খেলে তুমি—তিন মাস ওঁর অস্থখ– তাহার পর আমাদের দিকে ফিরিয়া বলিল----গুর কথা শোনবেন না। ওঁর কি কিছু ঠিক থাকে ? নিজের দিকে ওঁর কোনো খেয়াল নেই—এই শুনুন তবে আমার কাছে— কথাটা শোনাইল এভাবের যেন লোকটি দার্শনিক কিংবা কবি, অথবা ব্ৰহ্মদশী—সাংসারিক তুচ্ছ বিষয়ে স্বভাবতই ইনি অনাসক্ত। বোধ হয় ঈর্ষাপ্রণোদিত হইয়াই সীতানাথ ডাক্তার পুরুষটিকে জিজ্ঞাসা করিয়া বসিলেন—তোমার গনেরিয়া হয়েচে কতদিন ? --তা বাৰু চার-পাচ মাস হবে । সেবার যখন••• মেয়েটি ঝঙ্কার দিয়া উঠিয়া বলিল, তুমি তো সব জানো কিনা! চুপ করে। না বাবু, দু বছর হয়ে গেল । আমার হাড় মাস ভাজা করে খেলে ওই মিন্সে। কি জালায় যে পড়েচি আমি, মরণ হয় তো হাড় জুড়িয়ে যায় আমার । কাহার মরণ হইলে তাহার হাড় জুড়ায়, কথার ভাবে ঠিক ধরিতে পারিলাম না। সীতানাথ ডাক্তার বলিলেন—বাড়ী কোথায় ? মেয়েটি বলিল—বাড়ী এই বিটকিপোতায় । আমরা হাড়ি । --ও ! বিটকিপোতায় হাড়ির বাস আছে নাকি ? —না বাবু, দেশে দেশে ভেসে বেড়াচ্ছি এই ওনারে নিয়ে। বিয়ে করা সোয়ামী ফেলতে তো পারি নে। আজ দুটি বছর উনি বিছেনেয় পড়ে। উঠতি ইটিতি পারেন না। কত অস্থদ বিষুদ করলাম আমাদের দেশে ঘরে, যে যা বলে তাই করি, কিন্তু কিছুতেই সারাতি পারলাম না, দিন দিন যেন মানুষ উঠতি পারে না, খেতি পারে না । তাই আজ বলি—ডাক্তারবাবুর কাছে নিয়ে যাই–একটু দেখুন আপনি ভাল করে, আমার আর কেউ নেই— : আমি এতক্ষণ বসিয়া বসিয়া দেখিতেছিলাম। এইবার বলিলাম—তোমার স্বামী কি কাজ করে ? { মেয়েটি ঝঙ্কার দিয়া বলিয়া উঠিল—কাজ ! ওরে আমার কাজের শিরোমণি রে! ও করবে কাজ ? সেদিন পূবের স্বযু পশ্চিম পানে ওঠবে না ? - পুরুষটি লজ্জিতভাবে বলিল—না বাৰু, কাজ আমি করি নে। সে ক্ষামত নেই তো করবো কি । ও-ই ধান ভেনে দাইগিরি করে সংসার চালায়। তা এই বাজারে বড় কই “হয়েচে বাৰু।