পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՉծՏ বিভূতি-রচনাবলী পাড়া । ডাক দিলেই লোক পাবে। কোনো ভয় নেই। আমি এখানেই একটা কিছু করবো । এত লোকের চলচে আর আমার চলবে না ? খুব চলবে। তোমরা দাড়াও জিনিসপত্তর সব ওপরে নিয়ে আসি। কি কি গাছ আছে মুক্তোর মা ? মুক্তোর মা বললে—তিনটি আমগাছ আছে, সাতটা কাটাল গাছ, একটা পেয়ারা গাছ, একটা চালতে গাছ, একটা বিলিতি কুলগাছ, দুঝাড় কলাগাছ, চারটে নারকোল গাছ। বাবুরা নিজির হাতে সব লাগিয়েছিল, থাকবে বলে । শখ করে কলকেতা থেকে চারা এনে এই ওবছর ওই ছাখো একটা চাপাফুল গাছ বসিয়ে গিয়েচে । একটু পরে সন্ধ্যা হয়ে অন্ধকার নামলো। শুমলীর দুঃখ হোল, এখন আর কিছু দেখা যাবে না। নতুনতর জীবনযাত্রার পথে নতুনতর দেশের প্রতি-পথঘাট চিনে নেওয়া যেতো, ভাল করে দেখা যেতো আলোভরা দিনমানে । খামলী তাড়াতাড়ি লণ্ঠন জলিলে। ডাকলে—মুক্তোর মা, ও মুক্তোর মা— মুক্তোর মা মালপত্র গাড়ী থেকে নামিয়ে এনে দোতলায় তুলছিল। বললে--কি মা ? —জল আছে বাড়ীতে ? —জল তুলে রেখেচি একটা বালতিতে, আর তো পাত্তর নেই মা তাই তুলতে পারি নি— —সে কথা বলচি নে, বাড়ীতে জল আছে ? কুয়োটুয়ো— —বাধানো পাতকুয়ো আছে। নাওয়ার ঘর আছে, রান্নাঘরের পেছনে। চলুন, আমি দেখিয়ে দি । বাবুদের বাড়ী কোন ক্রটি ছিল না মা, আগাগোড়া সান বাধানে । চৌবাচ্চ আছে বাধানে । —তাতে জল তুলে রাখে নি ? —নাইবেন যদি তবে পাতকুয়োর জলে কেন মা ? দিব্যি বাধানো নদীর ঘাট, অসাগর জল নদীতে। এখন জোয়ার এসেচে, সব পৈঠেগুলো ডুবে গিয়েচে । চলুন গা ধুয়ে আসবেন । খামলী নদীর ঘাটেই নাইতে গেল। ঘাটের ঠিক পাশে কি একটা বড় প্রাচীন গাছ। তার ছায় পড়েছে বাধাঘাটের পৈঠেগুলোতে । কি একটা পুষ্পের স্ববাস বাতাসে ভুরভূর করচে। এই গাছ থেকেই আসচে । —কি ফুলের গন্ধ মুক্তোর মা ? —কি একটা লতা এই গাছে উঠেচে মা, কাল সকালে দেখবেন সাদা সাদা ফুল ফুটেচে। ভারি বাস বোরোয় রাক্তিরি । 彎 শু্যামলী জলে নামলো। আজ সে রূপকথার রাজকন্তে । স্নিগ্ধ জল, ওপারের দিক থেকে হাওয়া বইচে । সেই ফুলের স্বগন্ধ । তারাভরা আকাশ। এই বাধা ঘাট, এই প্রাচীন কি বনম্পতি, এই বনপুষ্প-স্ববাস—সব তাদের, নিজস্ব। তারা পয়সা দিয়ে কিনেচে । কলকাতায় সেই পচা ড়েন, কলতলা, অভয়া, বিশ্বাস গিন্নি সব স্বপ্ন হয়ে গিয়েচে একদিনে। তাদের জন্যেই সত্যি কষ্ট হোল। বেচায়ী মতির মা। বেচার শশীবাবুর বোঁ । ওদের একবার এখানে