পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসাধারণ もあ○ টাকা দেবে, আপনি নিয়ে যাবেন ? লুকিয়ে দিতে হবে কিন্তু টাকাটা। পাড়ার লোকে না জানতে পারে । মার বড় কষ্ট । আমি মাসে মাসে যা পারি মাকে দিই। গত মাসে একখানা কাপড় পাঠিয়ে ছিলাম। —কার হাতে দিয়ে দিলি ? —বিনোদ গোয়ালা এসেছিল, তার হাত দিয়ে লুকিয়ে পাঠালাম । —তোর ছেলেট কোথায় ? —মার কাছেই আছে। ভাবচি, এখানে নিয়ে আসবো । সেখানে খেতে-পরতে পাচ্চে না । এখানে খাওয়ার ভাবনা নেই জ্যাঠামশায়, দোকানের খাবার খেয়ে খেয়ে তো অছেদা হোল । সিঙ্গেড় বলুন, কচুরি বলুন, নিমকি বলুন—তা খুব । এমন আলুর দম করে ওই বটতলার খোট্ট দোকানদার, অমন আলুর দম কখনো খাই নি । এই এত বড় বড় এক একটা আলু– আর কত রকমের মশলা—আপনি আর একটু বলবেন ? আমি গিয়ে আলুর দম আনবো ? খেয়ে দেখবেন । 廳 নাঃ, ইহার সরলতা দেখিয়াও হাসি পায় । রাগ হয় না ইহার উপর। বলিলাম—না, আমি এখন যাচ্ছি। আর ওই টাকাটা আমি নিয়ে যাবে না, তুমি মনিঅৰ্ডার করে পাঠালেও তে৷ পারে । অন্য লোকে দেবে কি না দেবে—বিনোদ যে তোমার মাকে টাকা দিয়েচে কিনা, তার ঠিক কি ? হাজুর এ সন্দেহ মনে উঠে নাই এতদিন । বলিল—যা বলেচেন জ্যাঠামশাই, টাকাটা জিনিসটা তে এর ওর হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিই। মা পায় কি না পায় তা কি জানি । —এ পর্য্যন্ত কত টাকা দিয়েচ ? —তা কুড়ি পচিশ টাকার বেশী। আমি কি হিসেব জানি জ্যাঠামশাই ? ম| কষ্ট পায়, আমার তা কি ভালো লাগে ? —কার হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিস ? হাজু সলজ মুখে চুপ করিয়া রহিল। বুঝিলাম আমাদের গ্রামের লোকজন ইহার নিকট যাতায়াত করে । বলিলাম–আচ্ছা, দে সেই পাঁচটা টাকা ।–চলি— —আবার আসবেন জ্যাঠামশায় । বিদেশে থাকি, মাঝে মাঝে দেখে শুনে যাবেন «ՁՇ* 歌 গ্রামে ফিরিয়া হাজুর মায়ের সঙ্গে দেখা করিয়া টাকা পাচটি তাহার হাতে দিলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম—আর কেউ তোমাকে কোনো টাকা দিয়েছিল ? হাজুর মা আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল—কই না । কে দেবে টাকা ? বিনোদ ঘোষের নাম করিতে পারিতাম। কিন্তু করিলে কথাটা জানাজানি হইয়া পড়িবে। বিনোদ ভাবিবে আমারও ওখানে যাতায়াত আছে এবং হাজুর প্রণয়ীদের দলে আমিও ভিড়িয়া গিয়াছি এই বয়সে। কি গরজ আমার ?