পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ॐ**ांथोद्भर्ण ●●● জাগে যে সাহস ছিল, এখন আর সেটা নেই। নয়তো মণ্ট, মই সঙ্গকে সে গ্রাহও করে না । দুজনে অবশেষে বেরিয়ে গেল নদীর ধারে। কাঠ-কাটা নৌকা এসেছে পুব দেশ থেকে, বড় বড় গুড়ি পড়ে আছে এদিকে ওদিকে । বর্ষাকালে অনেক গুড়ির গায়ে তেলাকুচে লতা উঠেচে, দু'একটা তেলাকুচো ফলও ফলেচে । কি মায়া যে জায়গাটার ! হারুর বড় ভাল লাগে । খেলা করবার মত জায়গা । মন্ট ও হার কতক্ষণ সেখানে খেলা করলে, খেলা করবার উৎসাহ কারো কম নয়। তেলকুচে লতার ফল মণ্ট, তুলতে গেলে হারু তুলতে দিলে না। কেন, বেশ তো জুলচে লতার আগায়, একটা আধপাকাও হয়েচে, তুলবার কি দরকার ? বেশ দেখাচ্চে গাছে। বেনেবোঁ জোড়ায় জোড়ায় বেড়াচ্চে কালকাস্থলে গাছের ঝোপে ঝোপে। কতক্ষণ কেটে গিয়েচে দুজনের কারো খেয়াল নেই। মণ্ট কাছে গিয়ে বললে—আমন করে বসলি কেন রে ? জর এল নাকি ? —না:– —দেখি গা—ওরে বাসরে, গা যে পুড়ে যাচ্চে—বাড়ী যা বাড়ী যা— হারু বিমৰ্ষভাবে বললে—তুই জরের কথা অত করে মনে করিয়ে দিলি কেন ? আমি ভুলে ছিলাম বেশ । যেমন তুই মনে করিয়ে দিলি, অমনি আমার জর এল । মন্ট বললে—ন, না রে, তোর এমনিও জর আসতে, আমি মনে করে দেওয়ার জন্যে কি আর জ্বর এল ? ও তোর ভুল কথা। চ, বাডী চ– বাড়ীতে আজ চিংড়ি মাছ দিয়ে ডাটার চচ্চড়ি হচ্চে সে দেখে এসেচে। কলাইয়ের ডাল দিয়ে ওই চচ্চড়ি দিয়ে ভাত খেতে যে লাগে ! মাকে না বললেই হলো যে জর হয়েচে । মন্ট-কে পথ থেকেই সরিয়ে দেওয়ার জন্যে বললে— তুই বাড়ী যা—আমি এক যেতে পারবো-- —যেতে পারবি ঠিক ? —খুব । ভারি তো একটুখানি জর। ও এখুনি সেরে যাবে। তুই যা— হারু বাড়ী ফিরে দেখলে রান্না এখনো হয় নি। কিন্তু দেরি করতে গেলে চলবে না, সে জানে এর পরে এমন ভীষণ কম্প উপস্থিত হবে যে রোদে গিয়ে বসতেই হবে, নয় তো লেপ মুড়ি দিয়ে গিয়ে গুতে হবে । গায়ে কাটা দেবে, বমি হবে । সুতরাং ভাত যদি খেতে হয় তবে জার দেরি করা উচিত হবে না, এখুনি খেতে বসা উচিত । মা জর এলেচে বুঝতে পারলেই সব মাটি। আর ভাত দেবে না। ও রান্নাঘরের জোরে দাড়িয়ে নিৰ্ব্বিকার ভাবে বলে—ম, ক্ষিদে পেয়েচে । —কোথায় গিয়েছিলি রে সকাল বেলা ? —খেলা করছিলাম নদীর ধারে ।