পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভয় করিয়া চলে ; কারণ স্কুলে নারাণবাবুর হাতে বড় মার খায়। ইহাক তিনি অত ভালবাসেন না। --- o পান্না ঘরে ঢুকিয়া অপরাধীর দৃষ্টিতে মাস্টারের দিকে চাহিল, তারপর শেলফের কাছে গেল বই বাহির করিতে। নারাণবাৰু কড়া স্বরে বলিলেন, কোথায় ছিলে ? —খেলছিলাম স্তার। —কটা বেজেছে ছশ আছে ? - পড়ার ঘরেই ঘড়ি আছে দেওয়ালে। পান্না সে দিকে চাহিয়া দেখিল, সাড়ে ছয়ট। বাজিয়াছে। স্বতরাং সে বলিল, সাড়ে ছট স্তার। —ছ , গাধা কোথাকার । সাড়ে ছটা, না, সাড়ে সাতটা ? বল কটা বেজেছে ? ভাল করে দেখে বল। —সাড়ে সাতটা। —ঠিক হয়েচে। এই বল খেলে এলে ! কাল পড়া না হলে তোমার কী করি দেগো । চুনি বলিল, স্যার, আজ দুপুরে বেরিয়ে গিয়েচে, এই এল। - পান্না দাদার দিকে চাহিয়া বুলিল, লাগানো হচ্ছে স্যারের কাছে ? তোর ওস্তাদি আমি বার করে দেব বলচি । —দে না দেখি ? তোর বড় সাহস ! –এই মারলাম। কী করবি তুই ? নারাণবাবু বৃদ্ধ, দুই বলিষ্ঠ বালকের মধ্যে পড়িয় যুদ্ধ তো থামাইতে পারিলেনই না, অধিকন্তু চশমাট চূর্ণবিচূর্ণ হইবার সম্ভাবনা প্রবল হইয়া উঠিল। দেখিতে দেখিতে পান্না ড্রয়ারের ভিতর হইতে টর্চলাইট বাহির করিয়া চুনির মাথায় এক স্বা বসাইয়া দিল। ফিনকি দিয়া রক্ত ছুটিল । - চুনি হাউমাউ করিয়া কাদিবার ছেলে নয়, সে চুপ করিয়া,দাড়াইয়া রহিল ; নারাণবাবু স্থা-ই করিয়া আসিয়া পড়িতে না পড়িতে এই কাণ্ডটি ঘটিয়া গেল। গোলমাল শুনিয়া চুনি-পাল্লার মা, বিধবা পিসী ও দুই ভাই-বউ অন্তঃপুরের দিকের ঘরের দরজায় আসিয়া দাড়াইল। চুনিকে জিজ্ঞাসা করিয়া তাহারা কোন উত্তর না পাইয়া মাস্টারের উদেশে নানাপ্রকার মন্তব্য প্রকাশ করিতে ज्ञानिल-७,्वा, মাস্টার তো বসে আছে, তার চোখের সামনে ছেলেটাকে একেবারে খুন করে ফেললে গো ! জন্য একটি বন্ধু মন্তব্য করিল, মাস্টারকে মানে না দিদি, ছেলেগুলো ভারি দুই। চুনির মা বলিলেন, মাস্টার বসে বসে আফিম খেয়ে ঝিমোয়, তা ওকে মানবে কী করে ? o নারাণবায়ু মনে মনে ক্ষুব্ধ হইলেও মুখে বাড়ীর হীলোকদের উদেশে কী বলিবেন? কে ৫াহাকে আফিম খাওয়াইয়াছে শুনিবার তাহার বড় কৌতুহল হইল। -