পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*論物* বিভূতি-রচনাবলী সকাল থেকে দুৰ্য্যোগ চলচে । পুরীর বীরেন রায় একজন প্রসিদ্ধ প্রত্নতত্ত্ববিৎ । তিনি এবং কয়েকটি ভদ্রলোক এলেন গজেনবাবুর ওখানে, আমার সঙ্গে দেখা করতে। ধার্ঘ্য হলো ওৰেলা আমায় নিয়ে নাকি সস্বৰ্দ্ধনা করবেন, সেকথা বলে গেলেন। বেরিয়ে ফিরবার পরেই অত্যন্ত বৃষ্টি শুরু হোল। এদিকে পাণ্ডাঠাকুরের ছড়িদার বলে গেল যে একটার সময় মহাপ্রসাদ পাঠাবে। ক্ষিদেতে নাড়ী জলে যাচ্ছে, বাইরে ভীষণ দুৰ্য্যোগ, মহাপ্রসাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার নেই। অনেকক্ষণ পরে বৃষ্টি থামলো, প্রায় সাড়ে চারটে বিকেল— তখন ‘কণিকা’ প্রসাদ এল । হরিদাস ঠাকুরের সমাধি দর্শন করতে যাবার পূৰ্ব্বে কল্যাণী আমি উমা সবাই মিলে সমুদ্রতীরে অনেকক্ষণ বেড়িয়ে এলুম। কল্যাণী বহু ঝিনুক কুডুলে। অনেকদিন আগে এই দিনটিতে বারাকপুরে খুকু আমার সঙ্গে নাইতে গিয়ে ‘মাটি আনি বলে আমায় ফাকি দিয়ে ডাঙায় উঠে ছুট দিয়েছিল। তখন সে ব্যাপারটাতে কি দুঃখই হয়েছিল মনে । পায়ে হেঁটে চালকী চলে গিয়েছিলুম জাহ্নবীর ওখানে, মনে কষ্ট নিয়ে। আজ কোথায় জাহ্নবী, কোথায় সে খুকু, কোথায় বা সে দিনের মনের কষ্ট ! জীবনে এক যখন চলে যায়, তখন বড়ই কষ্ট হয় প্রথম প্রথম, কিন্তু শীঘ্রই অপরদল এসে তাদের স্থান পূর্ণ করে—তারাই আবার হয়ে দাড়ায় কত প্রিয় । গজেনবাবুদের সঙ্গে হরিদাস ঠাকুরের সমাধি দেখতে গেলুম। শ্ৰীচৈতন্যদেব এখানে ছিলেন আঠারো বছর—র্তার শ্রেষ্ঠ ভক্ত হরিদাস ঠাকুর যখন মারা যান, তখন তিনি নিজে তাকে কাধে নিয়ে এসে এখানে সমুদ্রতটে বালুকা খুড়ে সমাধিস্থ করেন। কালক্রমে এখন সেখানে বড় বড় বাড়ী হয়ে উঠেচে চারধারে । স্থানটি অতি শাস্তিপ্রদ, মনে একটি উদাস পবিত্র ভাব এনে দেয় । দুটি বালক শিষ্য হাতে ঝুলি নিয়ে মালা-জপ করচে, তারাই সব দেখালে । সেই পথেই পুরুষোত্তম মঠে গিয়ে পেছনের একটি অতি স্বন্দর স্থানে বসলুম। ডাইনে দুরপ্রসারী ঝাউবন, পাশেই টোটা গোপীনাথের বাগানে অজস্ৰ কঁঠালগাছ, সামনে বিস্তৃত বালুচরের পারে অপার নীলা রাশি সফেন উৰ্ম্মিমালা বুকে নিয়ে তটভূমিতে আবার আছড়ে পড়চে। সে দৃষ্ঠ দেখে আর চোখ ফেরাতে পারিনে, উঠতে ইচ্ছে হয় না। এই তো বিশ্বন্ধপের মন্দির, এই আকাশ, এই ঝাউবন, এই অপার নীল সমুদ্র । এ ছেড়ে কোথায় যাবো ? গজেনবাৰু কেবল বলে, চলুন বিভূতিবাৰু, সভার সময় হোল। সাতটাতে সভা। স্বমথবাবু বঙ্গে—আপনাকে দেখচি ওঠানো দায়, সভার সব লোক এসে যে ই করে বসে থাকবে-চলুন। ১•৮শ্ৰী তীর্থপতি মহারাজ এই পুরুষোত্তম মঠের মোহান্ত। তিনি বিলেতে গিয়েছিলেন গৌড়ীয় মঠ থেকে প্রচার করতে। তার সঙ্গে বন্ধ আধ্যাত্মিক আলোচনা হোল। বৈষ্ণবদের কি বিনয় ও ভক্তি। অত বড় পণ্ডিত বলেন হাত জোড় করে, আমি আপনাদের দাসাচুদাস