পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী হেডপণ্ডিত ভাবিতেন, মেয়েটি তাহাকে ফতুর করিবে, বায়োস্কোপের খরচ কত যোগাইবেন তিনি এই সামান্য ত্ৰিশ টাকা বেতনের মাস্টারি করিয়া ? উঃ, কী ভালই বাসিত সে ছবি দেখিতে। ছবি দেখিলে পাগল হইয়া যাইত, বাড়ী ফিরিয়া তিন দিন ধরিয়া তাহার মুখে অন্য কথা থাকিত না, ছবির কথা ছাড়া । কোথায় আজ চলিয়া গেল ! আজকাল দুই-একথানা ভাল বাংলা ছবি হইতেছে, ছবিতে কথাও কহিতেছে—এসব দেখিতে পাইল না মেয়ে। বায়োস্কোপের খরচ হইতে র্তাহাকে একেবারে মুক্তি দিয়া গিয়াছে। যদুবাবু বলিলেন, তা যাও এ বেলা দাদা,–ছুটিটার জন্যে। তুমি গিয়ে বললেই হয়ে যাবে। ইহাদের অনুরোধে হেডপণ্ডিত ভয়ে ভয়ে গিয়া হেডমাস্টারের আপিসে ঢুকিয়া টেবিলের সামনে দাড়াইলেন। ক্লার্কওয়েল সাহেব কী লিখিতেছিলেন, মুখ তুলিয়া বলিলেন, হোয়াট পাভিট্‌ ! সিওরলি ইট ইজ নট এ হলিডে ইউ হাভ, কাম টু আস্ক ফর ? হেড্ৰপণ্ডিত বলিলেন, কাল ঘণ্টাকর্ণপুজো স্তার সাহেব বলিলেন, হোয়াট ইজ দ্যাট ? ঘণ্টা— —ঘণ্টাকর্ণ। হিন্দুর এত বড় পৰ্ব্ব আর নেই। —ও ইউ নট ফেলো, তুমি প্রত্যেক বারই বল এক কথা। —না স্তার, পাজিতে লেখে— —ওয়েল, আই আণ্ডারস্ট্যাণ্ড ইট —হবে না, কী পূজো বললে ? ওতে ছুটি হবে না। হেডপণ্ডিত বুঝিলেন তাহার কাজ হইয়া গিয়াছে। সাহেব প্রত্যেক বারই ও-রকম বলেন, শেষ ঘণ্টায় দেখা যাইবে, স্কুলের চাকর সারকুলার-বই লইয়া ক্লাসে ক্লাসে ঘুরিতেছে । হেডপণ্ডিত ফিরিয়া আলিলে মাস্টারেরা তাহাকে ঘিরিয়া দাড়াইল । ক্ষেত্রবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, কী হল দাদা ? বন্ধুবাবু বলিলেন, কার্যসিদ্ধি ? : —#াড়াও দাড়াও, ইপি জিরিয়ে নিই। সাহেব বললে, হবে না। —হবে না বলেছে তো ? তা হলে ও হয়ে গিয়েচে । বাচা গেল দাদা, মলমাল যাচ্ছিল, তবুও ঘন্টাকর্ণের দোহাই দিয়ে— - —এখনও অত হাসিখুশির কারণ নেই। যদি পাশের স্কুলে জিজ্ঞেস করতে পাঠায় তবেই মূল ক্ষাক। আমি বলেছি, হিন্দুর অত বড় পৰ্ব্ব আর নেই। এখন যদি অষ্ট স্কুলে জানতে পাঠায় ? ছোকরা উমাপদবাবু বলিলেন, যদি তারাও ঘণ্টাকর্ণপুজোয় ছুটি দেয় ? হেণ্ডপণ্ডিত হাসিয়া বলিলেন, ঘণ্টাকর্ণপূজোর ছুটি কে দেবে, রামোঃ ! দ্ধি সাহেবের ধাত সবাই জানে। শেষ ঘণ্টা পৰ্য্যস্ত মাস্টারের দল ছুরু ছক বক্ষে অপেক্ষা করিবার পরে সকলেই দেখিল, স্কুলের চাকর ছুটির সারকুলার লইয়া ক্লাসে ক্লাসে দৌড়াhেঞ্জি করিতেছে"। "