পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

šes বিভূতি-রচনাবলী আম্রমুকুলের ঘন স্ববাস সন্ধ্যার বাতালে। কতকাল আসিনি শাখারিপুকুরের বঁাশবাগানে— ছিয়েপুকুরের ওপাড়ের পথে—সেই ত্রিশ-বত্রিশ বৎসরের পুরাতন বাল্যদিনগুলি ছাড়া । বিশ্বশিল্পীর অপূৰ্ব্ব স্বই এই পৃথিবী, এই পৃথিবীর বসন্ত, এই মানুষের মন । আমি না যদি থাকতুম, এ বসন্ত শোভা, এ শুক্লাপঞ্চমীর জ্যোৎস্না কে আস্বাদন করতো ? মামুষের মনের মধ্যে দিয়ে তিনি তার স্মৃষ্টির লীলারস আস্বাদ করচেন। যে সমজদার, যে রসিক শিল্পীমনের অধিকারী সে ধন্য—কারণ ভগবান তার চোখ দিয়ে, মন দিয়ে স্বষ্টির সৌন্দৰ্য্য উপভোগ করেন। স্বতরাং সমজদারের চোখ ভগবানের চোখ, সমজদার রসিকের মন ভগবানের মন—যা স্বষ্টিমুখী হোলে একটা গোটা বিশ্ব স্বষ্টি করে ফেলতে পারে চক্ষের পলকে। কি চমৎকার রাঙা ফুলে-ভৰ্ত্তি শিমূল গাছটার শোভা নদীর ধারে, ফণি চক্কত্তির জমিতে । এপুরে নীল আকাশের তলায় রোজ রাঙা ফুলগুলির দিকে চেয়ে দেখি স্নান করতে যাওয়ার সময়ে। চোখ ফেরাতে পারিনে। কাল আবার দুটো প্রজাপতি উড়ে উড়ে বলচে অত উচু গাছটার ফুলে ফুলে। প্রজাপতি—যার জন্ম শুয়োপোকা থেকে । শুয়োপোকাজীবন পরিত্যাগ করে প্রজাপতি জন্ম পরিগ্রহ করেচে, নীল আকাশের তলায় সৌন্দৰ্য্যলোকে বিচরণের অবাধ অধিকার লাভ করেচে। ঐ রাঙা ফুলে ভরা শিমূল গাছ, ঐ নীল আকাশ, ঐ উড্ডীয়মান রঙীন প্রজাপতি এসব যেন একটা বড় দর্শনের গ্রন্থ—শুধু যে ভাষায় ঐ গ্রন্থ লেখা তা সবাই পড়তে পারে না, বুঝতে পারে না । গভীর দর্শন-তত্ত্ব ও বইয়ে লেখা রয়েচে—লেখা রয়েচে আত্মার অমরত্বের গোপন বাণী, লেখা রয়েচে তার কামচর শক্তির অলেখা ইতিহাস। যে ঐ ভাষা বুঝতে পারে সে জানে। কাল দুপুরে ছিরেপুকুরের ওপারের রাস্তা দিয়ে শাখারিপুকুরের মধ্যে দিয়ে স্নানের পূৰ্ব্বে খানিকটা বললুম, তারপর বাশবনের ছায়ায় করা-বাশপাতার পথ দিয়ে পুকুরের একস্থানে এসে দাঁড়ালুম, সেখানে ঘেটু ফুলের একেবারে নিবিড় ভিড়। তেতো স্ববাস ছড়াচ্চে পুরের বাতাসে। ওখানে দাড়িয়ে মাঠের দিকে চাইতেই সেই উত্তর মাঠের রাঙা ফুলে-ভৰ্ত্তি বড় শিমূল গাছটা চোখে পড়লো। আমি সৌন্দর্ঘ্যে যেন কেমন অভিভূত হয়ে পড়লুম, আর নড়তে পারিনে, অন্য দিকে চোখ ফেরাতে পারিনে। সঙ্গে সঙ্গে একটা অপূৰ্ব্ব আধ্যাত্মিক জয়ন্থতি হোল-সে অনুভূতি এত স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষ যে, তার কথা আমি কাল সারাদিন তুলিনি। এবং সেকথা এখানেওঁ লিখে রাখলুম এজন্য যে এইসব দুল্লভ অহুভুতিরাজি যখন অস্পষ্ট হয়ে যাবে, তখন এই ক'টি লাইন পড়লে কালকার অনুভূতির বাণী আমার মনে প্রত্যক্ষ ও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। অনুভূতির প্রথম কথা হোল—মনের মধ্যে কে যেন বলে উঠলো—অভী, ভয় নেই। কিসের ভয় নেই ? কোনে কিছুরই না । “ন মৃত্যু ন শঙ্কা” ভগবান যুগ-যুগান্তরে, কল্প HDD DDD BBB BDS BBB BB BB BBBS BBB BeeBBB DD BBB BB দিয়ে। সকল জন্ম-মরণ পায় করে তিনি নিয়ে চলেচেন। জয়া নেই, মৃত্যু নেই। এমন