পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৫০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

cई अङ्गंभै; कथं कe gsరీ বিকেলে তিনজনে বেরুলাম বেড়াতে । রেলপথের ওপারে স্বধীরবাবুর বাস । সেবার এসে ওঁর সঙ্গে খুব আলাপ হয়েছিল । রাসবিহারীবাবুকে নিয়ে সুধীরবাবুর বাসায় গেলাম। তিনিও আমায় দেখে খুব খুশি । বিদেশে বাঙালীদের মধ্যে খুব হৃষ্ঠতা | আমাদের সন্ধ্যাবেল চা খেতে বল্লেন, রাত্রেও তার ওখানে না খেলে তিনি খুব দুঃখিত হবেন জানিয়ে দিলেন । স্বধীরবাবুর বাসা থেকে আমরা গেলাম নৃসিংহ বাবাজীর আশ্রম দেখতে। এই স্থানটি অতি মনোরম ৷ কোয়েল নদীর পাষাণময় তটের ওপরে একটি শু্যাম কুঞ্জবিতান । কত কি ফুলফলের গাছ এখানে যত্ন করে তৈরি করা হয়েছে, বিশেষ করে ফুলের গাছ। বকুল, নাগকেশর, চাপা থেকে আরম্ভ করে ক্ষুদ্র সন্ধামণি পৰ্য্যস্ত সব রকমের পুপ এখানে দেখা যাবে। ফুলের বাগান বলে মনে হয় না, মনে হয় ছায়ানিবিড় এক বনানী, মধ্যে মধ্যে ঘন বনের বুক চিরে পাথরের কুড়ি বিছানো সরু পায়ে চলার পথ পরস্পরকে কাটাকাটি করে স্ববিন্যস্ত ভাবে সোজা এদিকে ওদিকে চলে গিয়েছে। আশ্রমের ফটক ছাড়িয়ে প্রথমেই একটা পাথর বাধানো চত্বরের চারিপাশে কতকগুলো ছোট বড় পাকাবাড়ী। সাধুসন্ন্যাসীদের থাকবার জন্য বড় বড় ঘর ও বারান্দা । હર્ટ ঘর বাড়ীর পেছনে আর কোন মানুষের বাসের ঘর নেই, ঘন বননিকুঞ্জের মাঝে মাঝে লতাপাত ঢাকা ছেটি ছোট দেবমন্দির, তার কোনোটায় রামসীতা, কোনটাতে শ্ৰীকৃষ্ণ, কোনোটাতে শিবলিঙ্গ । অপেক্ষাকৃত বড় মন্দিরটি নৃসিংহদেবের । বনের মাঝে মাঝে পুপবিতানের আড়ালে পাথরের আসন । বোধ হয় সাধুদের ধ্যানধারণার জন্যে, কিংবা যে কেউ বসে বিশ্রাম বা চিন্তা করতে পারে । সাধুর খুব ভিড় আছে বলে মনে হোল না, বরং মনে হয়েছিল সমস্ত আশ্রমটিতে লোক খুবই কম। এত নির্জন যে বাগানের মধ্যে ঢুকলে ভয় করে, পথ হারিয়ে গেলে কেউ দেখিয়ে দেবার লোক নেই। সমস্ত আবহাওয়াটি অতি শান্ত ও পবিত্র। একটি সাধু ধুনি জালিয়ে বসে আছেন এক জায়গায় । সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে । নৃসিংহদেবের ঘণ্টাধ্বনি আশ্রমের নিস্তব্ধতাকে ভঙ্গ করছে। মন্দিরে দীপ জলছে। অনেকগুলি হারিকেন লণ্ঠন এখানে ওখানে গাছের গায়ে ঝুলছে । আমার প্রথমেই মনে হলো এত কেরোলিন তেল আসে কোথা থেকে ? সাধুজী বোধ হয় আশ্রমের মোহান্ত । আমরা সামনে গিয়ে বল্লাম-প্রণাম মহারাজ । সাধুজী আমাদের আশীৰ্ব্বাদ করে বলতে বল্লেন । কিছু ধৰ্ম্মকথা শোনালেন। তুলসীদাসের ‘রামচরিতমানস' থেকে কিছু বাণী উদ্ধৃত করে ব্যাখ্যা করলেন। আমাদের বিদায় নিয়ে চলে আলবার সময় সকলের হাতে হাতে প্রসাদ দিলেন, কলা আর কচুরি-আর একটা জিনিল এদেশে দেবমন্দিরে ভেট হিসেবে খুবই ব্যবহৃত হয়। এর নাম 'পানজেরি’—জিনিসটা হলো ধনেভাজার গুড়ো আর চিনি একসঙ্গে মেশানো ।