পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চেয়ে কথা আছে ? মিটির গেল। সেদিন সেখান হইতে বাহির হইয় পীগ্রামের উপর বিস্তৃক ধরিয়া গেল মারাণবাবুর। কী বিত্র জায়গা এ সব, বৃষ্টির পরে বাশবনের চেহারা দেখিলে মনে হয়, কোথায় যেন পড়িয়া গ্রেসে ফ্ল্যাট মেশিনের শব্দ হয়, ওয়েলেসলি স্ট্রীট দিয়া ঘণ্টা বাজাইয়া ট্রাম চলে, তখন এক অদ্ভূত রহস্তের ভাবে মন পূর্ণ হইয়া যায় ; মনে হয়, চিরজীবন এ কৰ্শ্বব্যস্ত জনাজাতের মধ্যে কাটাইলেও ক্লাস্তি আসে না, প্রMি নবীন হয়, এতটুকু সময়ের জন্ত অবসাদ আসে না মনে । এখান হইতে চলিয়া যাইতেন, কিন্তু ভাগ্নী যাইতে দেয় মা, জোর করিয়াও বাইতে মন সরে মা । জ্যোতির্বিবনোদ মহাশয়ও বাড়ী গিয়া খুব শাস্তিতে নাই। র্তাহার বাড়ী নোয়াখালি জেলায়। তিন বৎসরে এই একবার বাড়ী আসেন, বাড়ীতে ীিপুত্র সবাই আছে। ছুই-তিন ভাই, খুব বড় পরিবার—এমন কিছু বেশী মাহিনী পান মা, বাহাতে স্ত্রীপুত্ৰ লইয়া কলিকাতায় থাকিতে পারেন। বাড়ীতে আসিয়াই জ্যোতিবিনোদ এবার এক মোকদ্দমায় পড়িয়া গেলেন, জমিজমা সংক্রান্ত শরিকী মোকদ্দমা। তাহার পর হইল বড় ছেলেটির টাইফয়েড, সে সতেরে দিন ভূগিয়া এবং পয়সা খরচ করাইয় ঠেলিয়া উঠিল তো স্ত্রী পা পিছলাইয়া হাটু ভাভিয়া শয্যাগত হইয়া পড়িল। এই রকম নানা মুশকিলে জ্যোতির্বিানো অতি হইয়া উঠিলেন. এদিকে কলিকাতায় থাকিলে লোকের হাত দেখিয়া, ঠিকুজি কুষ্টি তৈরী করিয়া কিছু কিছু উপার্জনও হয়। এখানে সে উপার্জন নাই, শুধু খরচ আর খরচ। কলিকাতায় একরকম থাকেন ভাল, এক ধরে একা থাকেন, কোন গোলমাল নাই। সাহেবের দাপট সদ্ধ করিয়া থাকিতে পারিলে জার কোম হাঙ্গামা নাই। নিজে ধা-খুশি দুইটি রান্না করিলেন, অভাব-অভিযোগ হইলে নারাণবাৰুর কাছে টাকাটা লিকিটা ধার কাটাইয়া আসিয়াছে, তাহার পক্ষে এসব বড় বোঝা বলিয়া মনে হয়। ছুটি কুরাইলে যেন বঁাচা যায়।