পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী হ্যা স্তার। ফোর্থ ক্লাসের সতীশকে উনি যাট নম্বর দিয়েছেন যে খাতায়, তাতে চল্লিশের ৰেশী নম্বর ওঠে না। ভুল কাটেনও নি সব জায়গায়। এই কথার মধ্যে মুশকিল আছে। সব ভুল নিখুঁতভাবে কাটিয়া কোন মাস্টারই খাতা দেখেন না—স্বয়ং মিঃ আলম ও না। এখানে মি: আলম নতুন টীচারের উপর বেশ এক চাল চালিলেন। হেডমাস্টার খাতা চাহিয়া পাঠাইয়া সত্যই দেখিলেন, প্রত্যেক পাতায় এক-আধটা ভুল রহিয়া গিয়াছে, যাহা কাটা হয় নাই। নতুন মাস্টারের ডাক পড়িল ছুটির পর । হেডমাস্টার বলিলেন, ফোর্থ ক্লাসের হিষ্ট্রির খার্তা দেখেছিলেন আপনি ? —হঁ্যা স্তার। —খাত ভাল করে দেখেন নি তো। সব ভুলে লাল দাগ দেন নি। —বেশীর ভাগ দিয়েছি স্যার। দু-একটা ছুটে গিয়েছে হয়তো । —না, আমার স্কুলে ওভাবে কাজ করলে চলবে না। খাতা সব আপনি ফিরিয়ে নিয়ে যান । আবার দেখতে হবে । —যে আজ্ঞে স্যার । পরদিন নতুন মাস্টার সারকুলার-বই দেখিয়া বাহির করিলেন–মিঃ আলম ফাস্ট ক্লাসের ইংরাজী গ্রামার ও রচনার খাতা দেখিয়াছেন। তিনখানি থাত চাহিয়া লইয়া দেখিতে দেখিতে বাহির করিলেন, মিঃ অালম গড়ে প্রত্যেক পাতায় অন্তত তিনটি করিয়া ভুলের নীচে লাল দাগ দেন নাই । নতুন টীচার খাত কয়খানি হাতে করিয়া হেডমাস্টারের কাছে না গিয়া মি: আলমের কাছে গেলেন। খাতা দেখাইয়া বলিলেন, আপনার খাতা দেখা যদি আদর্শ হিসেবে নিতে হয়, তা হলে প্রত্যেক পাতায় আমার তিনটি ভুলে লাল দাগ না দিয়ে রাখা উচিত ছিল। দেখুন খাত। কখানা । * . মি: আলম উল্টাইয়। খাতাগুলি দেখিল। যুক্তি অকাট্য। গড়ে তিনটি করিয়া ভুলে লাল দাগ দেওয়া হয় নাই-খাটি কথা। মি: আলমের মুখ লাল হইয়া উঠিল অপমানে, কিন্তু কোন কথা বলিলেন না। নতুন টাচার বলিলেন, আপনি বুললেন কিনা হেডমাস্টারের কাছে আমার বড় ভুল থাকে খাতায়, তাই দেখালুম–ভুল সকলেরই থাকে। ওগুলোওভারলুক করতে হয়। সব কথায় হেডমাস্টারের কাছে— মি: আলম রাগিয়া বলিলেন, আপনি কী করে জানলেন, আমি হেডমাস্টারের কাছে বলেছি। —মনের অগোচর পাপ নেই। আপনি জানেন, আপনি বলেছেন কিনা—বলিয়াই নতুন টীচার বেশ কায়দার সহিত ঘর পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলেন। এ ব্যাপার কী করিয়া যেন অন্য টীচারেরা জানিতে পারিলেন, টীচারদের বসিবার ঘরে