পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী ঠিকা-বিকে মাঙ্গ মাস-তিনেক হইল ছাড়াইয়া দেওয়া হইয়াছে। স্ত্রীই বলিয়াছিল, কেন মিছিমিছি ঝির পেছনে আড়াই টাকা তিন টাকা খরচ—আজ একটু মুন দাও মা, আজ থিদে পেয়েছে জলখাবার দাও মা, আজ মাখবার একটু তেল দাও মা—এই সব ঝক্কি রোজ লেগেই আছে। দাও ছাড়িয়ে, কাজকৰ্ম্ম সব করব আমি । হাসিয়া বলিয়াছিল, কিন্তু মাসে মাসে আড়াইটে করে টাকা আমায় দিয়ো গো, ফাকি দিয়ে না যেন। কিন্তু শরীর খারাপ, মন খাটিতে চাহিলে কী হইবে, তিন মাসের মধ্যে এই তিনবার অম্বখে পড়িল। ডাক্তার ও ওষুধ-খরচে ঠিকা-ঝিয়ের ডবল খরচ হইয়া গেল। ক্ষেত্রবাবু নিজে বড় মেয়েটির সাহায্যে রান্নাঘর পরিষ্কার করিলেন। মেয়েকে বলিলেন বাসন মাজতে পারবি হাবি ? - হাবি মাত্র সাত বছরের মেয়ে। ঘাড় নাড়িয়া বলিল, ই, খুউ-ব । —যা দিকি, আমি কলতলায় দিয়ে আসচি । ঘরের ভিতর হইতে নিভাননী চি-চি করিয়া বলিল, ও পারবে না—একটা ঠিকে-ঝি দেখে নিয়ে এস। ওই সদ্‌গোপ-বাবুদের পাশের গলিতে মুলির মা বুড়ী থাকে, খোজ করে দেখগে । ক্ষেত্র বাবু ধমক দিয়া বলিলেন, তুমি চুপ করে শুয়ে থাক। আমি বুঝছি। কেন ও পারবে না ? শিখতে হবে না কাজ ? কাম কোথায় রে } হাবি বলিল, না বাবা, আমি পারব। দাদা খেলা করতে গিয়েচে । —সুজি কোথায় আছে ? ঘি ? নিভাননীর ধমক খাইয়া রাগ হইয়াছিল। সে কথা বলিল না। —আঃ, বলি-মুজিটা কোথায় ? সারাদিন খেটে খিদেতে মরছি, যা হয় কিছু খাব তো ? নিভাননী পূৰ্ব্ববং চি-চি করিতে করিতে বলিল, আমার কী দরকার কথায় ? যা বোঝ করে। তুমি । - হাবি বলিল, আমি জানি ধাবা,আমি দিচ্চি। তখন নিভাননী মেয়েকে ডাকিয়া বলিয়া দিল, স্বজি করিবার দরকার নাই, ও-বেলার রুট করা আছে শিকেয় হাড়িতে। নিয়ে খেতে বল। চা করে দিতে পারবি ? চায়ের কাপ ইত্যাদি লইয়া রান্নাঘরের দিকে যাইতে যাইতে বলিল, মা, উমনে আঁচ দিয়ে দবে কে ? ক্ষেত্রবাবু বলিলেন, তোমাকে ওসব করতে হবে না। হয়েছে, থাক, আর আমার চায়ে দরকার নেই। তারপর চা করতে গিয়ে জামায় আগুন লেগে মরুকনিড়াননী বলিল, আহ, মূখের কী মিষ্টি বাকি ! ক্ষেত্রবাবু এক মাল জল ঢকঢ়ক করিয়া খাইয়া ফেলিলেন। তারপর হাবির সাহায্যে কটি