পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবৰ্ত্তন বাহির করিয়া গুড় দিয়া এক-আধখানা নিজে খাইলেন, বাকি ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাগ করিয়া দিয়া টুইশানিতে বাহির হইলেন। হাবি বলিল, বাবা, মা বলছে রাত্রে কী থাবে ? একখানা পাউরুটি কিনে এনে— ক্ষেত্রবাৰু কথা কানে তুলিলেন না। ছাত্রের বাড়ী গিয়া মনে পড়িল, স্ত্রীর অম্বথের জন্ম একবার বেলেঘাটায় রামসদয় ডাক্তারের ওখানে যাইতে হইবে । খানিকটা আলাপ-পরিচয় আছে ; স্কুল-মাস্টার বলিয়া ভিজিটটা কম লইয়া থাকে তাহার কাছে। ছেলের বাপ আসিয়া কাছে বসিয়া ছেলের পড়ার তদারক করিতে লাগিল। ফলে ক্ষেত্রবাবু যে একটু সকাল সকাল বিদায় লইবেন, তাহার উপায় রহিল না। অভিভাবকের মনস্তুষ্টর দরুন বরং একটু বেশ সময় বসিয়া থাকিতে হইল। রাত্রি সাড়ে নয়টাৰু नबध्न ছাত্রের বাড়ী হইতে পদব্রজে বেলেঘাটা চলিলেন। ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করিয়া কাঞ্জ শেন কবিতে সাড়ে দশটা বাজিয়। গেল, কাজেই আসিবার পথে ছয়টি পয়সা বাসভাড়া দিয়া श्ट्रेल । - ." বাসায় ফিরিয়া দেখেন, ছেলেমেয়ের অঘোরে ঘুমাইতেছে। স্ত্রীর আবার জর আদিছিল সন্ধ্যার পরেই, সে বিছানায় পড়িয়া এপাশ-ওপাশ করিতেছে । ভীষণ ক্ষুধা পাইয়াছে। কিন্তু এত রাত্রে কী খাইবেন ? ভাত চড়াইবার ধৈর্য্য থাকে না আর এখন। নিভাননী জবে বেহুশ, তবুও সে জিজ্ঞাসা করিল, পাউরুটি এনেচ ? ঐ যাঃ ! পাউরুটি কিনিতে ভুলিয়া গিয়াছেন, অত কি ছাই মনে থাকে ? বলিলেন, না, আনতে মনে নেই। নিভাননী উদ্বিগ্নকণ্ঠে বলিল, তবে কী খাবে এখন ? ছুটে চি ড়ে কিনে আন না হয়— ক্ষেত্রবাবু বিরক্তির সহিত বলিলেন, হ্যা, এখন এগারোটা বাজে, আমার জন্যে চিড়ের দোকান খুলে রেখেছে তারা ! —দেখই নাগে, মোড়ের দোকানটা অনেক রাত পৰ্য্যস্ত খোলা থাকে। ক্ষেত্রবাবু সে কথার কোনও উত্তর না দিয়া কলসী হইতে এক মাস জল গড়াইয়া চকঢ়ক করিয়া খাইয়া আলো নিভাইয়া শুইয়া পড়িলেন, অর্থাৎ সমস্ত অসুবিধা ও অনাহারের দায়িত্বটা রুগ্ন স্ত্রীর ঘাড়ে চাপাইয়া দিলেন বিনাবাক্যব্যয়ে। নিভাননী দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া চুপ করিয়া রহিল। পরদিন সকালে ডাক্তার আসিয়া বলিল, রোগ বাক পথ ধরিয়াছে। বাড়ীতে ভাল চিকিৎসা হইবে না, হাসপাতালে পাঠাইতে পারিলে ভাল হয়। ক্ষেত্রবাবুর প্রাণ উড়িয়া গেল। হাসপাতালে স্ত্রীকে পাঠাইলে ছেলেমেয়েদের বাড়ীতে দেখাশোনা করে কে ? হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থাই বা তিনি কখন করেন ? ডাক্তারের হাতে-পায়ে ধরিয়া একটা চিঠি লিখাইয়া লইলেন ক্যাম্বেল হাসপাতালের এক ডাক্তারের নামে । খাইতে গেলে ক্যাম্বেল হাসপাতালে গিয়া কাজ মিটাইয়া আবার