পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী নারাণবাবু গষ্ঠীর মুখে বলিলেন, কেন করি, তোমরা জান না-আই নো এ রিয়াল টীচার হোয়েন দেয়ার ইজ ওয়ান—আমার কথা শোন ভায়, সাহেবকে তোমরা অনেকেই চেন নি । শিক্ষকের দল পরস্পরের কাছে বিদায় গ্রহণ করিলেন ; কারণ সকলেরই টুইশানির সময় হইয়াছে। পূজার ছুটির মাসখানেক দেরি। স্কুলের অবস্থা খুবই খারাপ। হেডমাস্টার সারকুলার দিলেন যে, যে মাস্টারের নিতান্ত দরকার, তাহারা আসিয়া জানাইলে কিছু কিছু টাকা দেওয়া হইবে, বাকী শিক্ষকদের ছুটির পর স্কুল খোলা পৰ্য্যস্ত অপেক্ষা করিতে হইবে মাহিনী লওয়ার জন্য । স্কুলে শিক্ষকদের মধ্যে হটগোল পড়িয়া গেল। যদুবাবু বলিলেন, এ সারকুলারের মানে কী হে ক্ষেত্র-ভায় ? আমাদের মধ্যে কে তালেবর আছে, যার টাকার দরকার নেই ? ক্ষেত্রবাবু সে সব কিছু জানেন না, তবে তাহার নিজের টাকার দরকার এটুকু জানেন। শ্ৰীশবাবু বলিলেন, তোমার যেমন দরকার, গরীব মাস্টার—পূজোর সময় শুধু হাতে বাড়ী যেতে হবে সারা বছর খেটে—সকলেরই দরকার। রামেন্দুবাবুকে সকলে বলা যাক । কিন্তু শোনা গেল, টাকা আদেী নাই ! আশামত আদায় হয় নাই। যা আদায় হইয়াছে, বাড়ীভাড়া আর কর্পোরেশন-ট্যাক্স দিতেই হইবে, যাহা কিছু উত্থত থাকিবে নিতান্ত অভাবগ্রস্ত শিক্ষকদের মধ্যে ভাগ করিয়া দেওয়া হইবে। সেদিন টীচারদের ঘরে হঠাৎ মি: আলমের আগমনে সকলে বিস্মিত হইল। মাস্টারদের বসিবার ঘরে মিঃ আলম বড় একটা আসেন না । মিঃ আলমকে দেখিয়া মাস্টারের সন্ত্রস্ত হইয়া পড়িল । যে বসিয়াছিল সে উঠিয়া দাড়াইল, যে গুইয়াছিল সে সোজা হইয়া বসিল। মিঃ আলম হাসিমুখে চারদিকে'চাহিয়া বলিলেন, বম্বন, বম্বন। তারপর ধীরে ধীরে নিজের আগমনের উদ্দেশু পাড়িলেন। হেডমাস্টারের এই যে সারকুলার, এ নিতান্ত জুলুমবাজি। কাহার টাকার জন্য কে এখানে খাটিতে আসিয়াছে ? সকলে এ উহার মুখ চাওয়া-চাওয়ি করিতে লাগিল। মিঃ আলম সাহেবের বিশ্বাসী লেফটেন্যান্ট, তাহার মুখে এ কী কথা ? সাহেবের স্পাই হিসাবেও মিঃ আলম প্রসিদ্ধ। কে কী কথা বলিবে তাহার সামনে ? মিঃ আলম বলিলেন, না, সাহেবকে দিয়ে এ স্কুলের আর উন্নতি নেই। আমি আপনাদের কো-অপারেশন চাই। আমার সঙ্গে মিলে সবাই সাহেবের বিরুদ্ধে সেক্রেটারির কাছে আর প্রেসিডেন্টের কাছে চলুন। স্কুলের যা আয়, তাতে মাস্টারদের বেশ চলে যায়। সাহেব আর মেম পুরতে সাড়ে চার শো টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। এ স্কুলের হাতী পোষার ক্ষমতা