পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিরাজ-বেী বেলা তখন প্রায় দুইটা, বাহিরের প্ৰচণ্ড রৌদ্রের দিকে চাহিয়া, সে শুধু মাথায় পথে বাহির হইবার কথা ভাবিতেও পারিল না, হতাশ হইয়া ছোটবোনের হাত ধরিয়া ঘরে আসিয়া শুইয়া পড়িল । হরিমতি কিছুক্ষণ অনর্গল বকিতে বকিতে এক সময়ে ঘুমাইয়া পড়িল। নীলাম্বর চুপ করিয়া • মনে মনে নানারূপ আবৃত্তি করিয়া দেখিতে লাগিল, কথাটা ঠিক কি রকম করিয়া পাড়িতে পারিলে খুব সম্ভব বিরাজের করুণার উদ্রেক করিবে । বেলা প্ৰায় পড়িয়া আসিয়াছিল। বিরাজ ঘরের শীতল মসৃণ সিমেন্টের উপর উপুড় হইয়া পড়িয়া বুকের তলায় একটা বালিশ দিয়া মগ্ন হইয়া মামা ও মামীকে চারপাত জোড়া পত্ৰ লিখিতেছিল। কি করিয়া এ বাড়ীতে শুদ্ধমাত্র মা শীতলার কৃপায় মরা বঁচিয়াছে, কি করিয়া যে এ যাত্রা সিথির সিদুর ও হাতের নোয়া বজায় রহিয়া গিয়াছে, লিখিয়া লিখিয়া ক্রমাগত লিখিয়াও সে কাহিনী শেষ হইতেছিল না, এমন সময় খাটের উপর হইতে নীলাম্বর হঠাৎ ডাকিয়া বলিল, একটি কথা রাখবে বিরাজ ? বিরাজ দোয়াতের মধ্যে কলামটা ছাড়িয়া দিয়া মুখ তুলিয়া বলিল, . কি কথা ? যদি রাখা ত বলি । বিরাজ কহিল, রাখবার মত হলেই রাখবো।--কি কথা ? নীলাম্বর মুহূৰ্ত্তকাল চিন্তা করিয়া বলিল, ব’লে লাভ নেই বিরাজ, তুমি কথা আমার রাখতে পায়বে না। বিরাজ আর প্রশ্ন করিল না, কলামটা তুলিয়া লইয়া পত্রটা শেষ করিবার জন্য আর একবার ঝুকিয়া পড়িল ; কিন্তু চিঠিতে মন দিতে পারিল না। ভিতরে ভিতরে কৌতুহলটা তাহার প্রবল হইয়া উঠিল। সে উঠিয়া বসিয়া বলিল, আচ্ছা বল, আমি কথা রাখব। ” নীলাম্বর একটুখানি হাসিল, একটুখানি ইতস্ততঃ করিল,"তাঞ্ছার পরে R