পাতা:বিলাসী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তথাপি আর একজনের মুখ হইতে আর একজনের কলঙ্ক-কাহিনীর মাধুৰ্যটা উপভোগ করিবার জন্য সবাই উদগ্রীব হইয়া উঠিল। কিন্তু একাদশী লজ্জায় ভয়ে একেবারে জড়সড় হইয়া গেল। তাহার নিজের জন্য নয়, ছোট বোনটির জন্য। প্ৰথম যৌবনের অপরাধ গৌরীর বুকের মধ্যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করিয়াছিল, আজিও যে তাহা তেমনি আছে, তিলাধ ও শুষ্ক হয় নাই, বুদ্ধ তাহা ভালরূপেই জানিত । পাছে বিন্দুমাত্ৰ ইঙ্গিতও তাহার কানে গিয়া সেই ব্যথা আলোড়িত হইয়া উঠে, এই আশঙ্কায় একাদশী বিবর্ণমুখে নিঃশব্দে চাহিয়া রহিল। তাহার এই সকরুণ দৃষ্টির নীরব মিনতি আর কাহারও চক্ষে পড়িল না, কিন্তু অপূর্ব হঠাৎ অনুভব করিয়া বিস্ময়ে অবাক হইয়া গেল । বিপিন বলিতে লাগিল, আমরা কি ভিখিরী যে দু'কোশ পথ হেঁটে এই রৌদ্রে চারগণ্ডা পয়সা ভিক্ষা চাইতে এসেচি ? তাও আবার আজ নয়, কবে ওর কোন খাতকের পাট বিক্রি হবে, সেই খবর নিয়ে আমাদের আর একদিন হাঁটতে হবে-তবে যদি বাবুর দয়া হয় ! কিন্তু লোকের রক্ত শুষে সুদ খাও বুড়ো, মনে করচে জোকের গায়ে জোক বসে না ? আমি এখানেও না তোমার হাড়ির হাল করি তা আমার নাম বিপিন ভট চায্যিই নয়। ছোটজাতের পয়সা হয়েছে বলে চোখে কানে আর দেখতে পাও না! চল হে অপূৰ্ব আমরা যাই, তার পরে যা জানি করা যাবে। বলিয়া সে অপুর্বর হাত ধরিয়া টান দিল । বেলা এগারটা বাজিয়া গিয়াছিল। বিশেষতঃ এতটা পথ হঁটিয়া আসিয়া অপূৰ্বর অত্যন্ত পিপাসা বােধ হওয়ায় কিছুক্ষণ পূর্বে চাকরাটাকে সে জল আনিতে বলিয়া দিয়াছিল। তাহার পর কলহবিবাদে সে কথা মনে ছিল না। কিন্তু তাহার তৃষ্ণার জল এক হাতে এবং অন্য হাতে রেকাবিতে গুটি-কয়েক বাতাসা লইয়া একটি সাতাশআটাশ বছরের বিধবা মেয়ে পাশের দরজা ঠেলিয়া ভিতরে প্রবেশ করিতে তাহার জল চাওয়ার কথা স্মরণ হইল। গৌরীকে ছোট VER