পাতা:বিলাসী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে পুনরায় কহিল, বন-জঙ্গলের পথ, একটু দেখে দেখে পা ফেলে যেয়ে । সর্বাঙ্গে। কঁটা দিয়া উঠিল, কিন্তু এতক্ষণে বুঝিলাম উদ্বেগটা তাহার কিসের জন্য এই কেন সে আলো দেখাইয়া এই বনের পথটা পার করিয়া দিতে চাহিতেছিল । হয়ত সে নিষেধ শুনিত না, সঙ্গেই যাইত, কিন্তু পীড়িত মৃত্যুঞ্জয়কে একাকী ফেলিয়া যাইতেই ৰোধ করি তাহার শেষ পর্যন্ত মন সরিল না । কুড়ি-পঁচিশ বিঘার বাগান । সুতরাং পথটা কম নয় ! এই দারুণ অন্ধকারের মধ্যে প্ৰত্যেক পদক্ষেপই বোধ করি ভয় ভয় করিতে হইত, কিন্তু পরীক্ষণেই মেয়েটির কথাতেই সমস্ত মন এমনি আচ্ছন্ন হইয়া রহিল যে, ভয় পাইবার আর সময় পাইলাম না । কেবল মনে ? হইতে লাগিল, একটা মৃতকল্প রোগী হইয়া থাকা কত কঠিন । মৃত্যুঞ্জয় ত যে কোন মুহুর্তেই মরিতে পারিত, তখন সমস্ত রাত্রি এই বনের মধ্যে মেয়েটি একাকী কি করিত ! কেমন করিয়া তাহার সে রাতটা কাটিত । এই প্রসঙ্গে অনেকদিন পরের একটা কথা আমার মনে পড়ে । এক আত্মীয়ের মৃত্যুকালে আমি উপস্থিত ছিলাম। অন্ধকার রাত্রিবাটীতে ছেলে।পুলে চাকর-বাকর নাই, ঘরের মধ্যে শুধু তঁর সত্যু বিধবা স্ত্রী, আর আমি । তার স্ত্রী ত শোকের আবেগে দাপাদাপি করিয়া এমন কাণ্ড করিয়া তুলিলেন যে, ভয় হইল তাহারও প্ৰাণটা বঝি বাহির হইয়া যায় বা । কঁাদিয়া কঁাদিয়া বার বার আমাকে প্রশ্ন করিতে লাগিলেন, তিনি স্বেচ্ছায় যখন সহমরণে যাইতে চাহিতেছেন, তখন সরকারের কি ? তার যে আর তিলাধ ৰীচিতে সাধ নাই, এ কি তাহারা বুঝিবে না ? তাহদের ঘরে কি স্ত্রী নাই ? তাহারা কি পাষাণ ? আর এই রাত্ৰেই গ্রামের পাঁচজনে যদি নদীর তীরের কোন একটা জঙ্গলের মধ্যে তার সহমরণের যোগাড় করিয়া ኪም