পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রহ লোক brS) মেঘের আবরণ একে ঘিরে আছে, যার আকার বদল মাঝে মাঝে দেখা যায় । শনির উপগ্রহ আছে নয়টি। সব চেয়ে বড়ো যেটি, আয়তনে সে বুধগ্রহের চেয়েও বড়ো, প্রায় আট লক্ষ মাইল দূরে থাকে, ষোলো দিনে তার প্রদক্ষিণ শেষ হয়। শনিগ্রহের বেষ্টনীর বর্ণচ্ছটা-পরীক্ষায় দেখা গেছে যে এই বেষ্টনীর যে সব অংশ গ্রহের কাছাকাছি অাছে তাদের চলন বেগ বাইরের দূরবর্তী অংশের চেয়ে অনেক বেশি । বেষ্টনী যদি অখণ্ড চাকার মতো হোত, তাহলে ঘূর্ণি চাকার নিয়মে বেগটা বাইরের দিকেই বেশি হোত । কিন্তু শনির বেষ্টনী যদি খণ্ড খণ্ড জিনিস নিয়েই হয় তাহলে তাদের যে দল গ্রহের কাছে, টানের জোরে তারাই ঘুরবে বেশি বেগে । এই সব লক্ষ লক্ষ টুকরো উপগ্রহ ছাড়াও ন’টি বড়ো উপগ্রহ ভিন্ন-পথে শনি গ্রহকে প্রদক্ষিণ করছে । কী ক’রে যে এ গ্রহের চারিদিকে দলে দলে ছোটো-ছোটো টুকরোর সৃষ্টি হোলো, সে সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের যে মত তারই কিছু এখানে বলা যাক । গ্রহের প্রবল টানে কোনো উপগ্রহই আপন গোল আকার রাখতে পারে না, শেষ পর্যন্ত অনেকটা তার ডিমের মতো চেহারা হয় । অবশেষে এমন এক সময় আসে যখন টান আর সহ্য করতে না পেরে উপগ্রহ ভেঙে দু-টুকরো হয়ে যায়। এই ছোটো টুকরোতুটিও আবার ভাঙতে থাকে। এমনি করে ভাঙতে ভাঙতে একটিমাত্র উপগ্রহ থেকে লক্ষ লক্ষ টকরো বেরোনো অসম্ভব হয় না ।