পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| o সাধারণ তুই একটি তত্ত্ব যখন দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিতেন অামার মন বিস্ফারিত হয়ে যেত। মনে আছে আগুনে বসালে তলার জল গরমে হালকা হয়ে উপরে ওঠে অার উপরের ঠাণ্ডা ভারি জল নিচে নামতে থাকে, জল ফুটতে থাকার এই কারণটা যখন তিনি কাঠের গুড়োর যোগে স্পষ্ট করে দিলেন, তখন অনবচ্ছিন্ন জলে একই কালে যে উপরে নিচে নিরস্তর ভেদ ঘটতে পারে তারি বিস্ময়ের স্মৃতি আজও মনে আছে । যে ঘটনাকে স্বতই সহজ ব’লে বিনা চিন্তায় ধরে নিয়েছিলুম সেটা সহজ নয় এই কথাটা বোধ হয়। সেই প্রথম আমার মনকে ভাবিয়ে তুলেছিল । তারপরে বয়স তখন হয়তো বারো হবে ( কেউ কেউ যেমন রং-কানা থাকে আমি তেমনি তারিখ-কানা এই কথাটি বলে রাখা ভালো ) পিতৃদেবের সঙ্গে গিয়েছিলুম ড্যালহৌসি পাহাড়ে। সমস্ত দিন ঝাপানে করে গিয়ে সন্ধ্যাবেলায় পৌছতুম ডাকবাংলায়। তিনি চৌকি আনিয়ে আঙিনায় বসতেন । দেখতে দেখতে, গিরিশৃঙ্গের বেড়া-দেওয়া নিবিড় নীল আকাশের স্বচ্ছ অন্ধকারে তারাগুলি যেন কাছে নেমে আসত। তিনি আমাকে নক্ষত্র চিনিয়ে দিতেন, গ্রহ চিনিয়ে দিতেন। শুধু চিনিয়ে দেওয়া নয়, সূর্য থেকে তাদের কক্ষচক্রের দূরত্বমাত্রা, প্রদক্ষিণের সময় এবং অন্যান্য বিবরণ আমাকে শুনিয়ে যেতেন । তিনি যা ব’লে যেতেন তাই মনে ক’রে তখনকার কাচা হাতে আমি একটা বড়ো প্রবন্ধ লিখেছি। স্বাদ পেয়েছিলুম ব’লেই লিখেছিলুম, জীবনে এই আমার