পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X o 8 বিশ্ব-পরিচয় দূরত্ব খুবই কম ব’লে একে এত উজ্জল ও আয়তনে এত বড়ো দেখায় । আশিটি চাদ একসঙ্গে ওজন করলে পৃথিবীর ওজনের সমান হবে । দুরবীনে চাদকে দেখলে স্পষ্টই বোঝা যায় পৃথিবীর মতোই শক্ত জিনিসে এ তৈরি । ওর উপরে আছে বড়ো বড়ো গহবর আর বড়ো বড়ো পাহাড় । পৃথিবীর টানে চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। এক পাক ঘুরতে তার এক মাসের কিছু কম লাগে। গড়পড়তায় তার গতিবেগ এক সেকেণ্ডে আধ মাইলের বেশি নয় । পৃথিবী ঘোরে সেকেণ্ডে উনিশ মাইল । আপন মেরুদণ্ডের চারদিকে ঘুরতে চাদের একমাসের সমানই লাগে । তার দিন আর বছর চলে একই রকম ধীর মন্দ চালে । চাদের ওজন থেকে হিসেব করা হয়েছে যে কোনো জিনিসের গতিবেগ যদি সেখানে সেকেণ্ডে ১॥০ মাইল হয় তা হোলে চাদের টান অগ্রাহ ক’রে তা ছুটে বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে । চাদ যে-নিয়মে অতিমাত্রায় রোদ পোহণয় তাতে তার তেতে-ওঠা পিঠের উপরে হাওয়া অত্যন্ত গরম হয়ে ওঠাতে চাদ তার বাতাসের অণুদের ধরে রাখতে পারে নি, তারা সবাই গেছে বেরিয়ে। যেখানে হাওয়ার চাপ নেই সেখানে জল খুব তাড়াতাড়ি বাষ্প হয়ে যায়। বাষ্প হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জলের অণু গরমে চঞ্চল হয়ে চাদের বাধন ছাড়িয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল । জল হাওয়া যেখানে নেই সেখানে কোনো রকমের প্রাণ টিকতে পারে ব’লে আমরা জানিনে । চাদকে একটা তাল-পাকানো মরুভূমি বলা যেতে পারে।