পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ o বিশ্ব-পরিচয় যেতে বেশি দিন লাগে না, কিন্তু বড়ো বড়ো দাগ দু-তিন সপ্তাহ থাকে। কুরবীন দিয়ে দেখলে মনে হয় যেন এর ক্রমাগত ডানদিকে ঘুরে যাচ্ছে, কিন্তু আসলে ঘুরছে এদের সবাইকে গায়ে নিয়ে সূর্য। এই কালে দাগের অনুসরণ ক’রে এই ঘুরে যাওয়ার সময়টার হিসাব পাওয়া গেছে ; প্রমাণ হয়েছে যে, পৃথিবী ঘোরে চব্বিশ ঘণ্টায়, সূর্য ঘোরে ছাবিবশ দিনে । সূর্যের দাগগুলো সূর্যের বাইরের আবরণে প্রকাণ্ড আবতৰ্ক গহবর। সেখান থেকে উত্তপ্ত গ্যাস কুণ্ডলী আকারে ঘুরতে ঘুরতে উপরে বেরিয়ে আসছে ! এর কেন্দ্রপ্রদেশ ঘোর কালো, তার নাম আম্ব ; তার চারদিকে কম কালো বেষ্টনী, তার নাম পেনাস্থ। । এদের কালো দেখতে হয়েছে চারপাশের দীপ্তির তুলনায়,—সেই আলো যদি বন্ধ করা যেত তাহলে অতি তীব্র দেখা যেত এদের জ্যোতি । সূর্যের যে দাগ খুব বড়ো তার কোনো কোনোটার আম্বার এক পার থেকে আর এক পারের মাপ পঞ্চাশ হাজার মাইল, দেড় লক্ষ মাইল তার পেনাম্বার মাপ । সূর্যের এই সব দাগের কমা-বাড়ার প্রভাব পৃথিবীর উপরে নানা রকমে কাজ করে । যেমন আমাদের আবহাওয়ায় । প্রায় এগারো বছরের পালাক্রমে সূর্যের দাগ বাড়ে কমে। পরীক্ষায় দেখা গেছে বনস্পতির গুড়ির মধ্যে এই দাগি বৎসরের সাক্ষ্য অঁাকা পড়ে । বড়ো গাছের গুড়ি কাটলে তার মধ্যে দেখা যায় প্রতি বছরের একটা ক’রে চক্র চিহ্ন ।