পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সৌরজগৎ

কোনো দণ্ডই নয়। যে জায়গাটাতে শলা থাকতে পারত কাল্পনিক সোজা লাইনের সেই জায়গাটাকেই বলি মেরুদণ্ড। যেমন লাটিম। সে ঘোরে, আপন মাঝখানের এমন একটা খাড়া লাইনের চারদিকে, যে লাইনটা মনে ক’রে নেওয়া।

 মেরুদণ্ডের চারদিকে পৃথিবীর এক পাক ঘুরতে লাগে চব্বিশ ঘণ্টা। সূর্যও আপন মেরুদণ্ডের চারদিকে ঘোরে। ঘুরতে কতক্ষণ লাগে তা যে উপায়ে জানা গেছে সে-কথা বলি। খুব ভোরে যখন আলোতে চোখ ধাঁধায় না তখন সূর্যের দিকে তাকালে হয়তো দেখা যাবে সূর্যের গায়ে কালো কালো দাগ আছে। এক-একটি কালো দাগ সময়ে সময়ে এত বড়ো হয়ে প্রকাশ পায় যে, সমস্ত গ্রহ উপগ্রহ একত্র করলেও তার সমান হয় না। ছোটো দাগগুলি মিলিয়ে যেতে বেশিদিন লাগে না, কিন্তু বড়ো বড়ো দাগ দু-তিন সপ্তাহ থাকে। দুরবীন দিয়ে দেখলে মনে হয় যেন এরা ক্রমাগত ডানদিকে ঘুরে যাচ্ছে, কিন্তু আসলে ঘুরছে এদের সবাইকে গায়ে নিয়ে সূর্য। এই কালো দাগের অনুসরণ করে এই ঘুরে যাওয়ার সময়টার হিসাব পাওয়া গেছে; প্রমাণ হয়েছে যে, পৃথিবী ঘোরে চব্বিশ ঘণ্টায়, সূর্য ঘরে ছাব্বিশ দিনে।

 সূর্যের দাগগুলো সূর্যের বাইরের আবরণে প্রকাণ্ড আবত গহ্বর। সেখান দিয়ে ভিতর থেকে উত্তপ্ত গ্যাস কুণ্ডলী আকারে ঘুরতে ঘুরতে উপরে বেরিয়ে আসছে। এর কেন্দ্র-

৭৭