পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রহলোক

তাদের যে ছাই মিশেছে সে বড়ো কম নয়। পৃথিবীর উপরে হাওয়ার দোয়া না থাকলে এইসব ক্ষুদ্র শত্রুর আক্রমণে আমাদের রক্ষা থাকত না।

 উল্কাপাত দিনে রাতে কিছু না কিছু হয়ে থাকে। কিন্তু বিশেষ বিশেষ মাসের বিশেষ বিশেষ দিনে উল্কাপাতের ঘটা হয় বেশি। ২১শে এপ্রিল, ৯, ১০, ১১ই আগস্ট, ১২, ১৩, ১৪ই ও ২৭শে নভেম্বরের রাত্রে এই উল্কাবৃষ্টির আতশবাজি দেখবার মতো জিনিস। এ-সম্বন্ধে দিনক্ষণের বাঁধাবাঁধি দেখে বিজ্ঞানীরা কারণ খোঁজ করতে প্রবৃত্ত হয়েছেন।

 ব্যাপারটা হচ্ছে এই, ওদের একটা বিশেষ পথ আছে। কিন্তু গ্রহদের মতো ওরা একা চলে না, ওরা দ্যুলোকের দলবাঁধা পঙ্গপালের জাত। লক্ষ লক্ষ চলেছে ভিড় করে এক রাস্তায়। বৎসরের বিশেষ বিশেষ দিনে পৃথিবী গিয়ে পড়ে ঠিক ওদের যেখানে জটলা। পৃথিবীর টান ওরা সামলাতে পারে না। রাশি রাশি বর্ষণ হোতে থাকে। পৃথিবীর ধুলোয় ধুলো হয়ে যায়। কখনো কখনো বড়ো বড়ো টুকরোও পড়ে, ফেটেফুটে চারিদিক ছারখার করে দেয়। সূর্যের এলেকায় অনধিকার প্রবেশ করে বিপন্ন হয়েছে এমন ধূমকেতুর এরা দুর্ভাগ্যের নিদর্শন। এমন কথাও শোনা যায় তরুণ বয়সে পৃথিবীর অন্তরে যখন তাপ ছিল বেশি, তখন অগ্ন্যুৎপাতে পৃথিবীর ভিতরের সামগ্রী এত উপরে ছুটে

৯৩