পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

 পৃথিবীর ভিতরের অবস্থা জানতে গেলে যতটা খুঁড়ে দেখা দরকার এখনো ততটা নিচে পর্যন্ত খোঁড়া হয়নি। কয়লার খোঁজে মানুষ মাটির যতটা নিচে নেমেছে সে এক মাইলের তাতে কেবল এই খবরটা পাওয়া গেছে যে, যত পৃথিবীর নিচের দিকে যাওয়া যায় ততই একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় গরম বাড়তে থাকে। এই উত্তাপ বৃদ্ধির পরিমাণ সব জায়গায় সমান নয় স্থানভেদে মাত্রাভেদ ঘটে। একসময়ে একটা মত চলতি ছিল, যে, ভূস্তরটা ভাসছে পৃথিবীর ভিতরকার তাপে-গলা তরল ধাতুর উপরে। এখনকার মত হচ্ছে পৃথিবীটা নিরেট, ভিতরের দিকে তাপের অস্তিত্ব দেখা যায় বটে কিন্তু পৃথিবীর স্তরে যেসব তেজস্ক্রিয় পদার্থ আছে, যথেষ্ট তাপ পাওয়া যাচ্ছে তাদের থেকে। তার অন্তঃকেন্দ্রের উপাদান লোহার চেয়ে নিবিড়। সম্ভবত সে-স্থানটি খুব গরম, কিন্তু এতটা নয় যাতে ভিতরকার জিনিস গ’লে যেতে পারে আন্দাজ করা যাচ্ছে সেখানকার জিনিসটা লোহা আর নিকেল, তা’রা আছে দুহাজার মাইল জুড়ে, আর তাদের বেড়ে আছে যে-একটা খোল, সে পুরু, দুহাজার মাইলের উপরে।

 পৃথিবীর সমস্তটাই যদি জলময় হোত তাহলে তার ওজন যতটা হোত, জলে স্থলে মিশিয়ে তার চেয়ে তার ওজন সাড়ে পাঁচগুণ বেশি। তার উপরকার তলার পাথর জলের চেয়ে তিনগুণ বেশি ঘন। তাহলে তার ভিতরে

১০৬