পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

তা’রা জ্বলতে জ্বলতে মাটিতে এসে পৌঁছয়, বোমার মতো যায় ফেটে, চারদিকে যা পায় দেয় ছারখার ক’রে।

 চাঁদেও ক্রমাগত এই উল্কাবৃষ্টি হচ্ছে। ওদের ঠেকিয়ে ছাই করে দেবার মতো একটু হাওয়া নেই, অবাধে ওরা ঢেলা মারছে চাঁদের সর্বাঙ্গে। বেগ কম নয়, সেকেণ্ডে প্রায় ত্রিশ মাইল, সুতরাং ঘা মারে সর্বনেশে জোরে।

 চাঁদে বড়ো বড়ো গর্তের উৎপত্তি একদা উৎসারিত অগ্নিউৎস থেকেই। যে গলন্ত পদার্থ ও ছাই তখন বেরিয়ে এসেছিল, হাওয়া জল না থাকায় এত যুগ ধরেও তাদের কোনো বদল হোতে পারেনি। ছাইটাকা আছে বলে সূর্যের আলো এই আবরণ ভেদ করে খুব বেশি নিচে যেতে পারে না, আর নিচের উত্তাপও উপরে আসতে পারে না।

 চাঁদের যেদিকে সূর্যের আলো পড়ে তার উত্তাপ প্রায় ফুটন্ত জলের সমান, আর যেখানে আলো পড়ে না, তা এত ঠাণ্ডা হয় যে বরফের শৈত্যের চেয়ে তা প্রায় ২৫০ ফারেনহাইট ডিগ্রি নিচে থাকে। চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়া এসে যখন চাদের উপরে পড়ে তখন তার উত্তাপ কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রায় ৩৪৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট কমে যায়।

 হাওয়া না থাকায় ও ছাইয়ের আবরণ থাকায় সূর্যের আলো নিচে প্রবেশ করতে পারে না বলে সঞ্চিত কোনো উত্তাপই চাদে নেই; তাই এত তাড়াতাড়ি এর উত্তাপ কমে

১১৬