পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমাণুলোক

সেটা একটা-কিছু ঢেউ আর বর্ষণ, আর ভিতরে আমরা যা পাচ্ছি তা, না এটা, না ওটা, তাকে আমরা বলি আলো;— এর মানে কী, কোনো পণ্ডিত তা বলতে পারলেন না।

 যা ভেবে ওঠা যায় না, যা দেখাশোনার বাইরে, তার এত সূক্ষ্ম এবং এত প্রকাণ্ড খবর পাওয়া গেল কী করে, এ প্রশ্ন মনে আসতে পারে। নিশ্চিত প্রমাণ আছে, আপাতত এ কথা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। যাঁরা প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন অসাধারণ তাঁদের জ্ঞানের তপস্যা, অত্যন্ত দুর্গম তাঁদের সন্ধানের পথ। তাঁদের কথা যাচাই ক’রে নিতে যে বিদ্যাবুদ্ধির দরকার, তাও আমাদের অনেকের নেই। অল্প বিদ্যা নিয়ে অবিশ্বাস করতে গেলে ঠকতে হবে। প্রমাণের রাস্তা খোলাই আছে। সেই রাস্তায় চলবার সাধনা যদি করো, শক্তি যদি হয়, তবে একদিন এ-সব বিষয় নিয়ে সওয়াল জবাব সহজেই হেতে পারবে।

 আপাতত আলোর ঢেউয়ের কথাই বুঝে নেওয়া যাক। এই ঢেউ একটিমাত্র ঢেউয়ের ধারা নয়। এর সঙ্গে অনেক ঢেউ দল বেঁধেছে। কতকগুলি চোখে পড়ে, অনেকগুলি পড়ে না। এইখানে ব’লে রাখা ভালো, যে-আলো চোখে পড়ে না, চলতি ভাষায় তাকে আলো বলে না। কিন্তু দৃশ্যই হোক অদৃশ্যই হোক, একটা কোনো শক্তির এই ধরনের ঢেউ-খেলিয়ে চলাই যখন উভয়েরই স্বভাব, তখন বিশ্বতত্ত্বের বইয়ে ওদের