পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমাণুলোক

ব’লে তারা যে শান্ত থাকে তা নয়, তাদের মধ্যে কম্পন চলছেই কিন্তু তাদের স্বাধীনতার ক্ষেত্র অল্পপরিসর।

 অণুদের মধ্যে এই চলন কাঁপন, এই হচ্ছে তাপ। অস্থিরতা যত বাড়ে গরম ততই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এদের একেবারে শান্ত করা সম্ভব হোত যদি এদের তাপ তাপমানের শূন্য অঙ্কের নিচে আরো ২৭৩ ডিগ্রি সেণ্টিগ্রেড নামিয়ে দেওয়া সম্ভব হোত।

 এইবার হাইড্রোজেন-গ্যাসের পরমাণু-মহলে দৃষ্টি দেওয়া যাক।

 এর চেয়ে হালকা গ্যাস আর নেই। এর পরমাণুর কেন্দ্রে বিরাজ করছে একটি মাত্র বৈদ্যুতকণা যাকে বলে প্রোটন, আর তার টানে বাঁধা প’ড়ে চারদিকে ঘুরছে অন্য একটিমাত্র কণিকা যার নাম ইলেকট্রন। প্রোটন কণায় যে বৈদ্যুতের প্রভাব সে পজিটিভধর্মী, আর ইলেকট্রনকণা যে বৈদ্যুতের বাহন সে নেগেটিভধর্মী। নেগেটিভ ইলেকট্রন চটুল চঞ্চল, পজিটিভ প্রোটন রাশভারি। ইলেকট্রনের ওজনটা গণ্যের মধ্যেই নয়, পরমাণুর প্রায় সমস্ত ভার তার কেন্দ্রবস্তুতে হয়েছে জমা।

 মোটের উপরে সব ইলেকট্রনই না-ধর্মী বটে কিন্তু এমন একজাতের ইলেকট্রন ধরা পড়েছে যারা হাঁ-ধর্মী, অথচ ওজনে ইলেকট্রনেরই সমান। এদের নাম দেওয়া হয়েছে পজিট্রন।