পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমাণুলোক

এই ধাতুর একটি অদ্ভুত স্বভাব। সে নিজের মধ্যে থেকে জ্যোতিষ্কণা বিকীর্ণ করে নিজেকে নানা মৌলিক পদার্থে রূপান্তরিত করতে করতে অবশেষে সীসে করে তোলে। এ যেন একটা বৈজ্ঞানিক ভেলকি বললেই হয়। এক ধাতু থেকে অন্য ধাতুর যে উদ্ভব হোতে পারে, সে এই প্রথম জানা গেল।

 যে সকল পদার্থ রেডিয়মের এক জাতের, অর্থাৎ তেজ ছিটোনোই যাদের স্বভাব তারা সকলেই জাত-খোওয়াবার দলে। তারা কেবলি আপনার তেজের মূলধন খরচ করতে থাকে। এই অপব্যয়ের ফর্দে প্রথম যে তেজ পদার্থ পড়ে, গ্রীক বর্ণমালার প্রথম অক্ষরের নামে তার নাম দেওয়া হয়েছে আলফা। বাংলা বর্ণমালা ধরে তাকে ক বললে চলে। একটা পরমাণু, পজিটিভ জাতের। রেডিয়মের আরো একটা ছিটিয়ে-ফেলা তেজের কণা আছে, তার নাম দেওয়া হয়েছে বীটা, বলা যেতে পারে খ। সে ইলেকট্রন, নেগেটিভ-চার্জ-করা বিষম তার দ্রুত বেগ। তবু পাতলা একটি কাগজ চলার রাস্তায় পড়লে আলফা-পরমাণু দেহান্তর লাভ করে, সে হয়ে যায় হেলিয়ম-গ্যাস। আরো কিছু বাধা লাগে বীটাকে থামিয়ে দিতে। রেডিয়মের তূণে এই দুটি ছাড়া আর একটি রশ্মি আছে তার নাম গামা। সে পরমাণু বা অতিপরমাণু নয়, সে একটি বিশেষ আলোকরশ্মি। তার কিরণ স্থূল বস্তুকে

৩১