পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

ভেদ করে যেতে পারে, যেমন যায় র‍্যণ্টগেন রশ্মি। এই সব তেজস্কণার ব্যবহার সকল অবস্থাতেই সমান, লোহা-গলাননা গরমেও, গ্যাস-তরল-করা ঠাণ্ডাতেও। তা ছাড়া তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আবার পূর্বের মতো দানা বেঁধে দেওয়া কারো সাধ্যে নেই।

 পরমাণুর কেন্দ্রপিণ্ডটিতে যতক্ষণ না কোনো লোকসান ঘটে ততক্ষণ দুটো-চারটে ইলেকট্রন যদি ছিনিয়ে নেওয়া যায় তাহলে তার বৈদ্যুতের বাঁধা বরাদ্দে কিছু কমতি পড়তে পারে কিন্তু অপঘাতটা সাংঘাতিক হয় না। যদি ঐ কেন্দ্রবস্তুটার খাস তহবিলে লুটপাট সম্ভব হয় তাহলেই পরমাণুর জাত বদল হয়ে যায়।

 পরমাণুর নিজের মধ্যে একান্ত ঐক্য নেই এ খবরটা পেয়েই বিজ্ঞানীরা প্রথমটা আশা করেছিলেন যে, ছুঁড়ে-মারা গোলন্দাজ রেডিয়মকে লাগাবেন পরমাণুর মধ্যে ভেদ ঘটিয়ে তার কেন্দ্র-সম্বলভাঙা লুটপাটের কাজে। কিন্তু লক্ষ্যটি অতিসূক্ষ্ম, নিশানা করা সহজ নয়, তেজের ঢেলা বিস্তর মারতে মারতে দৈবাৎ একটা লেগে যায়। তাই এরকম অনিশ্চিত লড়াই-প্রণালীর বদলে আজকাল প্রকাণ্ড যন্ত্র তৈরির আয়োজন হচ্ছে যাতে অতি প্রচণ্ড শক্তিমান বৈদ্যুত উৎপন্ন হয়ে পরমাণুর কেন্দ্রকেল্লার পাহারা ভেদ করতে পারে। সেখানে আছে প্রবল পালোয়ান শক্তির পাহারা। আজ ঠিক যে-সময়টাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারবার জন্যে সহস্রীঘ্নী যন্ত্রের

৩২