পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

কিরীটিকা পরীক্ষা করবার সময় বর্ণলিপির নীলসীমানার দিকে দেখা গেল তিনটি অজানা সাদা রেখা। পণ্ডিতেরা ভাবলেন হয়তো কোনো একটি আগের জানা পদার্থ অধিক দহনে নূতন দশা পেয়েছে, এটা তারি চিহ্ন। কিংবা হয়তো একটা নতুন পদার্থই বা জানান দিল। এখনো তার ঠিকানা হোলো না।

 ১৮৬৮ খ্রীস্টাব্দের গ্রহণের সময় বিজ্ঞানীদের এই রকমই একটা চমক লাগিয়েছিল। সূর্যের গ্যাসীয় বেড়ার ভিতর থেকে একটা লিপি এল তখনকার কোনো অচেনা পদার্থের। এই নূতন-খবর-পাওয়া মৌলিক পদার্থের নাম দেওয়া হলো হেলিয়ম, অর্থাৎ সৌরক। কেননা তখন মনে হয়েছিল এটা একান্ত সূর্যেরই অন্তর্গত গ্যাস। অবশেষে ত্রিশ বছর কেটে গেলে পর বিখ্যাত রসায়নী র‍্যামজে এই গ্যাসের আমেজ পেলেন পৃথিবীর হাওয়ায় অতি সামান্য পরিমাণে। তখন স্থির হোললা পৃথিবীতে এ গ্যাস দুর্লভ। তার পরে দেখা গেল উত্তরআমেরিকায় কোনো মেটে তেলের গহ্বরে যে গ্যাস পাওয়া যায় তাতে যথেষ্ট পরিমাণে হেলিয়ম আছে। তখন একে কাজে লাগাবার সুবিধে হোলো। অত্যন্ত হালকা ব'লে এতদিন হাইড্রোজেন-গ্যাস দিয়ে আকাশযানগুলোর উড়োনশক্তির জোগান দেওয়া হোত। কিন্তু হাইড্রোজেন-গ্যাস ওড়াবার পক্ষে যেমন কেজো, জ্বালাবার পক্ষে তার চেয়ে কম। এই গ্যাস অনেক মস্ত মস্ত উড়ো জাহাজকে জ্বালিয়ে

৩৪